ইসি সরকারের ‘দাস’ হয়ে আছে: মান্না

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের উপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন নিবন্ধন না পাওয়া দল নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 July 2018, 12:27 PM
Updated : 7 July 2018, 12:27 PM

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক মতবিনিময় সভায় তিনি ইসিকে সরকারের ‘দাস’ বলে মন্তব্য করেন।

এই সভায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের বিধি সংস্কারের দাবি তোলেন।

এই তিনটি দলই এবার নিবন্ধিত হতে ইসিতে আবেদন করেছিল। মান্নার দলকে ‘না’ বলে দিয়েছে ইসি। গণসংহতি ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিও নিবন্ধন পাচ্ছে না বলে খবর ছড়িয়েছে।

২০০৮ সালে দল নিবন্ধন বিধি হওয়ার পর থেকে নিবন্ধিত দল ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেওয়া যায়  না।

মান্না বলেন, “নির্বাচন কমিশন তো এখন সরকারের দাস। খুলনায় যে নির্বাচন হয়েছে তার ফলাফল দেখেছেন। মৃত ব্যক্তি  ভোট দিয়ে চলে যায়! বোঝেন তাহলে কীরকম নির্বাচন হয়েছে? গাজীপুরে কী হয়ে আপনারা দেখেছেন।”

“গাজীপুরের নির্বাচনের বিষয়ে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, তখন কমিশন  বলেছে যে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো সংজ্ঞা নেই। তাহলে এই কমিশন কি আপনাদের (রাজনৈতিক দল) নিবন্ধন করতে দেবে?”
বর্তমান সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনারদের নির্বাচন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জাসদ, বাসদ হয়ে আওয়ামী লীগে কিছু দিন থাকার পর এখন নাগরিক ঐক্য নিয়ে সক্রিয় মান্না।

তিনি বলেন, “এখন যে নির্বাচন কমিশন বসে আছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার বসে আছেন, জীবনে কোনো জায়গায় কোনো নির্বাচন করেছেন? কোনো রাজনৈতিক দল করেছেন? রাজনৈতিক দল করতে কী করতে হয় তা জানেন? কোনো অভিজ্ঞতা আছে?

“যে নিজেই জানে না কী রকম করে খেলতে হয়, সে যদি এখন মেসির দোষ দেখে, যে যদি নেইমারের দোষ দেখে, তাহলে বলতে হবে পাগল। আমাদের নির্বাচন কমিশনে যারা আছেন, তারা কোন নির্বাচন সুষ্ঠু, তাই জানেন না, তাহলে দল কোনটা সুষ্ঠু, সেটা বোঝেন কী করে?”

বর্তমান নিবন্ধন আইন বাতিলের দাবিতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান মান্না।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক বলেন, “যে আওয়ামী লীগ এক সময় মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকারের জন্য লড়াই করেছে, সেই আওয়ামী লীগ  এখন ভোটাধিকারকে ভয় পাচ্ছে, ভোটের অধিকারের বিরুদ্ধে তারা দাঁড়িয়েছে। এটা তাদের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরাজয়।

“আওয়ামী লীগের বিল্ডিংটা উপরের দিকে উঠছে, কিন্তু তার নীতি-নৈতিকতা, রাজনীতি, গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, স্বেচ্ছাচারিতা একটা চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।”

গণসংহতির প্রধান সমস্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, “নির্বাচন কমিশন নতুন রাজনৈতিক দলের সুস্থ বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে। এই নিবন্ধন আইন গণতান্ত্রিক নয়, এটি রাজনৈতিক দলের মৌলিক অধিকার খর্ব করার শামিল বলে মনে করি।

“এটি বৈষম্যমূলক গণবিরোধী একটি আইন। এই আইনের সংস্কার অবশ্যই আনতে হবে। এজন্য অবশ্যই সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে।”

‘জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ আইনের ৯০ বি ধারা বাতিল, নতুন রাজনৈতিক দল, গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকাশে নির্বাচন কমিশন ও সরকারেই প্রধান অন্তরায়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় ডাকসুর সাবেক ভিপি ও জাসদ নেতা মুশতাক হোসেন,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সাবেক সাংসদ তাসনীম রানা, বাংলাদেশ কংগ্রেসের সভাপতি কাজী রেজাউল হোসেন বক্তব্য রাখেন।