মুক্তিযোদ্ধা কোটার ‘যৌক্তিক’ সংস্কার চান মুক্তিযোদ্ধা সেলিম

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে-বিপক্ষে নানা কথার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটার ‘যৌক্তিক সংস্কার’ করার পক্ষে মত দিয়েছেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 July 2018, 06:48 PM
Updated : 3 July 2018, 06:48 PM

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে তিনি বলেন, “একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মনে করি, বর্তমানে সরকারি চাকরিতে যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা হয়েছে, তার যৌক্তিক সংস্কার হওয়া উচিত।”

তবে সিপিবি, বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার যৌথ আয়োজনে ওই সমাবেশ থেকে নারী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা থাকা উচিৎ বলে মন্তব্য করেন সেলিম।

বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য রয়েছে ৩০ শতাংশ।

কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার দাবিতে কয়েক মাস আগে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে আন্দোলন শুরুর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকবে।

আন্দোলন চলার এক পর্যায়ে তিনি সংসদে বলেন, কোনো কোটাই আর থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রীর কথার বাস্তবায়নে দেরিতে আবার আন্দোলনে নামে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’, তাদের উপর দফায় দফায় হামলাও চালায় ছাত্রলীগ। তারা আন্দোলনের নামে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে বলে ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ।

আন্দোলনকারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে সিপিবি, বাসদ ও বাম মোর্চা সমাবেশ করে।

হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে সিপিবি সভাপতি সেলিম বলেন, “কোটা সংস্কারের যৌক্তিক ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে সরকারি দলের পক্ষ থেকে বিকৃতভাবে জাতির সামনে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এ আন্দোলনকে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধবিরোধী আখ্যায়িত করা হচ্ছে।”

ডাকসুর সাবেক ভিপি সেলিম বলেন, “ছাত্রলীগের গুণ্ডামি ষাটের দশকের সরকারি ছাত্র সংগঠন এনএসএফের গুণ্ডামিকেও ছাড়িয়ে গেছে। ছাত্রলীগের গুণ্ডামিতে ছাত্র-ছাত্রীদের রক্তে শহীদ মিনার রঞ্জিত হয়েছে।”

হামলাকারী ছাত্রলীগকর্মীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি প্রেস ক্লাবে মঙ্গলবার অভিভাবক সমাবেশ থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক ও ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি বাকী বিল্লাহকে আটকের প্রতিবাদ জানান তিনি।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে সিপিবি সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জিলানী শুভ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিন প্রিন্স বক্তব্য দেন।

বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, “কোটা সংস্কার নিয়ে পরিস্থিতি জটিল করার জন্য দায়ী সরকার এবং আমলারা। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা সত্ত্বেও কোটা ব্যবস্থা পর্যালোচনার জন্য কমিটি গঠন করতে আড়াই মাস সময় নেওয়া হয়েছে। এ কমিটিও গঠিত হত না, যদি ছাত্র-ছাত্রীরা দ্বিতীয় দফায় আন্দোলন শুরু না করত।”

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল রাজধানীর তোপখানা রোড ও পল্টন এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।