খালেদার জামিন স্থগিতের পর বিএনপির কর্মসূচি

খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিতাদেশে বিস্ময় প্রকাশ করে এর প্রতিবাদে আগামী বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ সারাদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 July 2018, 04:50 PM
Updated : 2 July 2018, 04:50 PM

দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে আগামী ৯ জুলাই ঢাকাসহ সারাদেশে প্রতীক অনশনের কর্মসূচিও দিয়েছে দলটি।

সোমবার সন্ধ্যায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলন করে এই কর্মসূচি জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, “... একটি মামলায় একটি আদেশ দেওয়া হয়েছে, যে আদেশটি আমাদের বিম্মিত ও বিক্ষুব্ধ করেছে, গোটা জাতি আজকে বিক্ষুব্ধ হয়েছে। 

“আপিল বিভাগ থেকে এই আদেশটি হয়েছে। বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং নিয়ন্ত্রণ করে দেশনেত্রীকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে কারাগারে আটক রাখার চেষ্টা করছে সরকার।”

কুমিল্লায় পেট্রোল বোমায় বাস পুড়িয়ে মানুষ হত্যার মামলায় খালেদাকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল সোমবার নিষ্পত্তি করে দিয়েছে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ।

আদেশে বলা হয়, খালেদা জিয়ার জামিন প্রশ্নে হাই কোর্ট যে রুল দিয়েছিল, চার সপ্তাহের মধ্যে তার নিষ্পত্তি করতে হবে। সে পর্যন্ত জামিনের ওপর চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।

এর ফলে অন্য সব মামলাতেও যদি জামিন হয়, তারপরও আগামী এক মাসে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ থাকছে না।

এটাকে খালেদাকে আটকে রাখতে সরকারের ‘ন্যক্কারজনক অপকৌশল’ আখ্যায়িত করে ফখরুল বলেন, এর প্রতিবাদে তারা আগামী ৫ জুলাই ঢাকাসহ সারাদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ আহ্বান করেছেন।

ঢাকা মহানগরীতে প্রতিবাদ সমাবেশ নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সকাল ১১টায় হবে বলে জানান তিনি।

“এরপর দেশনেত্রীর মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে আগামী ৯ জুলাই প্রতীক অনশন অনুষ্ঠিত হবে সারাদেশে। ঢাকাতে আমরা স্থানের জন্য ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন অথবা মহানগর নাট্যমঞ্চে চাইব। আশা করি আমরা অনুমতি পাব।”

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার জামিন উচ্চ আদালতে বহাল রাখার পরও কেন তিনি এখনও মুক্তি পাচ্ছেন না? সারাদেশে দেশের মানুষের কাছে এটা বড় প্রশ্ন।

“এর প্রধান কারণ হল নিম্ন আদালত। কুমিল্লায় তিনটি, নড়াইলে একটি ও ঢাকায় দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে তাকে। এগুলো একেবারে নিষ্ক্রিয় ও হয়রানিমূলক মামলা। এই ছয়টা মামলায় অন্যান্য আসামিরাও কিন্তু জামিনে মুক্ত আছেন।”

সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ বলেন, “নিম্ন আদালতকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে সরকার, সেজন্য নিম্ন আদালতের বিচারকরা তাই করছেন। তা না হলে হাই কোর্টের আদেশের পরও নিম্ন আদালতের বিচারকরা মানছেন না। এটা ভয়ংকর একটা বিষয়।”

চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হামলার প্রতিবাদও জানান বিএনপি মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, জয়নাল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এজে মোহাম্মদ আলী, আবদুল কাইয়ুম, কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সিনহা, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল।