রোববার দুপুরে রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “শিক্ষাঙ্গনের গণতন্ত্রবিরোধী বিপদজ্জনক শক্তি হচ্ছে ছাত্র লীগ। গতকাল তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর পৈশাচিক হামলা চালিয়েছে; বেছে বেছে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়েছে।
“গতকাল আন্দোলনকারীদের ওপর যে বর্বরোচিত হামলার ঘটনা ঘটেছে বিএনপির এর তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছে। “
শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিটুনির শিকার হন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা।
ক্যাম্পাসের গ্রন্থাগারের সামনে এই হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন আন্দোলনকারীরা; হামলার সময় সংগঠনটির কয়েকজন নেতাকে ঘটনাস্থলে দেখা গেছে।
তবে হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে সরকার সমর্থক সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, আন্দোলনকারীদের ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দলে’ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ব্যানারে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করে আসছে একদল শিক্ষার্থী।
তাদের আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ‘ঘোষণা’ দিলেও সরকারি প্রজ্ঞাপন না আসা পর্যন্ত নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নেওয়াটা প্রধানমন্ত্রীর তামাশা ছিল বলে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, মূলত প্রধানমন্ত্রী সেদিন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করেছেন।
“ছাত্রলীগের মন শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার রঙে রাঙানো। এই সময়ের ছাত্রলীগ প্রকৃত কোনো ছাত্র সংগঠন নয়। এটি প্রধানমন্ত্রীর ভাড়াটিয়া বাহিনী।”
ছাত্রলীগের অতীত ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “আমি বলব না যে, ছাত্রলীগের ঐতিহ্য নেই। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে ছাত্রলীগের যে গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য সেটাকে অবশ্যই আমরা সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি।
“কিন্তু শেখ হাসিনার অধীনে যে ছাত্রলীগ, সেই ছাত্রলীগ হচ্ছে ফ্যাসিস্ট বাহিনীর ইয়াং ট্রুপার, এটাকে একটা গ্যাস্টাপো বাহিনীতে পরিণত করেছে ক্ষমতাসীন দল। এরা আইন মানে না, কানুন মানে না। এরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অপমান করে, শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত করে, সিট বাণিজ্য করে এবং প্রতিবাদের ভাষা উচ্চারিত হলেই তারা সেখানে নেকড়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্তপান করে।”
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা তুলে ধরে আবারো তার মুক্তির ও সুচিকিৎসার জন্য অবিলম্বে ইউনাইটেড হাসপাতালে স্থানান্তরের দাবি জানান রিজভী।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আবদুস সালাম আজাদ, মাহবুবুল হক নান্নু ও শামসুজ্জামান সুরুজ এসময় উপস্থিত ছিলেন।