তাছাড়া অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভয়াবহ পরিণতি হবে বলেও হুঁশিয়ার করেছেন মাঠ পর্যায়ের নেতারা।
গণভবনে শনিবার আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পর আট সাংগঠনিক জেলার পক্ষ থেকে একজন করে কথা বলেন।
সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ ও জাতীয় কমিটির সদস্য, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, দেশের বিভিন্ন মহানগরের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সারা দেশের জেলা ও উপজেলা, পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও জয়ী হওয়ার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে বলেন, “আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে, যেন এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার জয়লাভ করে সরকার গঠন করতে পারে।”
নির্বাচনে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি পরিহার করার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা বদনাম নিতে চাই না, জনগণের মন জয় করেই কিন্তু ক্ষমতায় আসতে হবে।”
সরকারের করা উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা তৃণমূলের উদ্দেশ্য বলেন, “এত কাজ আমরা করেছি, যে উন্নয়ন আমরা করেছি, এত উন্নয়ন করার ফলে মানুষ যে নৌকায় ভোট দেবে না, তা কিন্তু নয়। যদি না দেয় তার জন্য দায়ী থাকবেন আপনারা তৃণমূল এটাই আমার কথা। আপনারা সঠিকভাবে মানুষের কাছে যেতে পারেননি, বলতে পারেননি, বুঝাতে পারেননি, সেবা করতে পারেননি; সেইজন্যই.. নইলে এখানে হারার তো কোনো কথা না।”
পরে বক্তব্য দিতে গিয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনে কেন্দ্রীয় টিম গঠনের প্রস্তাব দেন।
তিনি বলেন, “ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের কোনো সমস্যা আছে বলে মনে হয় না। কিন্তু, আমাদের সমস্যা হচ্ছে দলের কোন্দল। তৃণমূলে একই সাথে কর্মসূচি পালনের কোনো পরিবেশ নেই। দলের নেতারা একই মঞ্চে উঠে না। কেউ কারো চেহারাও দেখতে চান না। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগকে হারানোর জন্য আওয়ামী লীগই যথেষ্ট।”
জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাকি বিল্লাহ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।
তিনি বলেন, “নতুন করে অনেকে নৌকায় ওঠার কারণে আমাদের পশ্চাৎদেশ ভিজে যেতে শুরু করেছে। এটা অব্যাহত থাকলে নৌকার সলিল সমাধি হবে। নৌকা তীর খুঁজে পাবে না।
“জিয়া আর মোস্তাকের প্রেতাত্মারা নৌকার ওপর ভর করেছে, এদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।”
গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বকর বলেন, “কী পেলাম কী পেলাম না সেই চিন্তা না করে নৌকার জন্য কাজ করতে হবে।”
খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন-অর রশীদ দুর্দিনে যারা দলের সঙ্গে ছিলেন তাদের মূল্যায়নের তাগিদ দেন।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, বরিশাল বিভাগের পক্ষে ধীরেন্দ্র নাথ শম্ভু, চট্টগ্রামের পক্ষে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন এবং সিলেটের পক্ষে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেসার উদ্দিন আহমেদ বক্তব্য দেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বিএনপি ‘গঠনতান্ত্রিকভাবে দুর্নীতিকে দলের নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে’ বলে মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “দুর্নীতিকেই তারা তাদের গঠনতন্ত্রে নিয়ে এসেছে। তাদের নীতিটাই হচ্ছে-এটা আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছে।”
খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের দায়িত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিএনপির গঠনতন্ত্রে ছিল কেউ যদি দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত হয় তাহলে চেয়ারপারসন হতে পারবে না। তারা এই গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে দুর্নীতিবাজকে রাখতে পারে সেই ব্যবস্থা করছে। নিজেরাই স্বীকার করেছে তাদের দলটি দুর্নীতির দল।”