তিনি বলছেন, পরিত্যক্ত এই কারাগারে খালেদা জিয়াকে রাখাটা ‘সভ্য আচরণের মধ্যে পড়ে না’। রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে তার সঙ্গে ‘রাজনৈতিক আচরণ’ করা উচিত।
জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় সাজা হওয়ার পর থেকে চার মাসের বেশি পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের ওই কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া। সোয়া দুইশ বছরের পুরনো এই কারাগারের সব বন্দিকে দুই বছর আগে কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগারে সরিয়ে নেওয়া হয়। সেখানে এখন একমাত্র বন্দি হিসেবে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার পর কারাগারে জেল সুপারের কক্ষটিকে সংস্কারের পর ‘স্পেশাল জেল’ ঘোষণা করে সেখানেই প্রথম দিন রাখা হয় খালেদাকে। পরে দোতলার একটি কক্ষে স্থানান্তর করা হয় তাকে, যা আগে কারাগারে ‘ডে কেয়ার সেন্টার’ হিসেবে ব্যবহার হত।
এরমধ্যে ৫ জুন খালেদা জিয়া কিছুক্ষণের জন্য অচেতন হয়ে পড়লে তাদের উদ্বেগ আরও বাড়ে। দ্রুত ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির দাবি করে চিকিৎসার দাবি জানিয়েছেন তারা।
রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে ওই দাবি পুনর্ব্যক্ত করে কারাগারের পরিবেশ নিয়ে কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, “ঢাকার সেন্ট্রাল জেল সত্যিকার অর্থে সবচেয়ে খারাপ। এখানে এতো বড় বড় ইঁদুর দৌড়ায়, এতগুলো বেড়াল ওখানে যারা ইঁদুর ধরে। আপনারা শুনলে হতবাক হবেন যে, ম্যাডামের ঘরের মধ্যে ওই বেড়াল বড় ইঁদুর ধরেছে।
“তারপরে ম্যাডাম অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মানসিক দিক দিয়ে। উনি তো এসব দেখতে অভ্যস্ত নন। তেলাপোকা, ছারপোকা- এটা কমন ব্যাপার। আরও আছে বড় বড় বিছা।”
এ সময় ছয় বছর আগে নিজের কারাবাসের অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, “আমি প্রথমবার যখন গেলাম ২০১২ সালে। আমার মনে আছে, এখানে দাদা (গয়েশ্বর চন্দ্র রায়) আছে। যে রুমে আমি ও দাদা ছিলাম, তার পাশের রুমে ছিলেন আন্দালিব পার্থ (বিজেপির চেয়ারম্যান) ও শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।
“হঠাৎ রাত্রিবেলা চীৎকার করে উঠেছে পার্থ: ‘চাচা আমি তো আর বাঁচব না। কেন কী হয়েছে? এত বড় বিছা! ও যে সারারাত চৌকির উপর বসল, আর নামে না। এটা বাস্তবতার কথা বলছি। আপনারা দেখবেন পুরনো ইউরোপের ছবিতে যে চিত্র দেখা যায়, এখানে সেই অবস্থা।”
তিনি বলেন, “বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সব সময় বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত দেখছেন। উনি প্রথম থেকেই সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য একে একে নির্বাচনের প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছেন, বিচার বিভাগের প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছেন, একে একে প্রশাসনের প্রাতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছেন।
“এসব করে দিয়ে উনার গণতন্ত্র হচ্ছে- উনি একা এবং তার পার্টি। এছাড়া আর কেউ নেই। সেটাই হচ্ছে তার গণতন্ত্র।”
এই গণতন্ত্র কখনোই ‘টিকে থাকতে পারে না, টিকবে না’ বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।