নির্বাচনী বাজেট, বাস্তবায়নের সক্ষমতা নেই: বিএনপি

প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘নির্বাচনী বাজেট’ আখ্যায়িত করে বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘বিশাল অংকের’ এই বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা সরকারের নেই।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2018, 03:52 PM
Updated : 7 June 2018, 04:48 PM

আর বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বলেছেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের উপস্থাপিত এই বাজেট ‘একটি ফাঁকা বেলুন, নীল রঙের বেলুন’।

বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেছেন, দেশের ব্যাংক খাত ও পুঁজিবাজারসহ বিভিন্ন খাতে ‘যে নৈরাজ্য চলছে’ তা নিরসনে প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো ‘দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়নি’।

অর্থমন্ত্রী মুহিত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে চার লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন, যা  বিদায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ২৫ এবং মূল বাজেটের চেয়ে ১৬ শতাংশ বেশি।

বিকালে পল্টনে মুক্তি ভবনে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক কল্যাণ পার্টির ইফতার মাহফিলে বক্তব্যে বাজেটের আকার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ।

তিনি বলেন, “এই বাজেট বাস্তবায়ন করার জন্য সরকারের আর্থিক সক্ষমতা নাই, প্রশাসনিক দক্ষতাও নাই। আমরা মনে করি, এই বাজেট কোনো অবস্থাতে বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এটা লোক দেখানো বাজেট, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করার বাজেট।”

বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা, যেখানে বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ৫৯ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা।

২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত

রাজস্ব আদায়ের এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না মন্তব্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক খন্দকার মোশাররফ বলেন, “রাজস্ব ঘাটতি পূরণের দায়িত্ব পড়বে সাধারণ মানুষের উপরে, প্রত্যেকের পকেট থেকে এই ঘাটতি পূরণ করা হবে।”

তিনি বলেন, “এটি জনগণের স্বার্থের বাজেট নয়। সরকার ঋণনির্ভর একটি বাজেট দিয়েছে। এতে জনগণের উপর ঋণের বোঝা বেড়ে যাবে এবং দেশে অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য কমে যাবে।”

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “বেশ কিছু পণ্যের উপরে স্থানীয় পর্যায়ে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক, রেগুলেটরি ডিউটি, ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে। তৈরি পোশাক শিল্পে ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে, অনেক পণ্যের ট্যারিফ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমরা যে ১১০০ ধরনের পন্য আমদানি করি তার উপরে ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে। ই-কমার্সকে ভ্যাটের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

“অন্যদিকে করপোরেট ট্যাক্স কমানো হয়েছে। এর ফলে ধনীকে আরও ধনী করা হবে এবং দরিদ্র আরও দরিদ্র হবে।”

মওদুদ আহমদ (ফাইল ছবি)

বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আরেক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, “প্রস্তাবিত বাজেট বিশাল একটি বেলুন, নীল রঙের বেলুন। কিন্তু এর ভেতরে কিছু নাই, ফাঁকা। এটি একটি গতানুগতিক বাজেট।

“তারা একটা আপসকামী বাজেট দিয়েছেন নির্বাচন সামনে রেখে। এই সরকারের বাজেট দেওয়ার অধিকার আছে কি না সেটাও একটা বিরাট প্রশ্ন। কারণ এই সংসদের ১৫৪ জন সদস্য বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন, যারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না।”

নির্বাচনী বাজেট দিয়ে সরকার ‘জনগণকে ভোলাতে পারবে না’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।