৩ মামলায় হাই কোর্টে খালেদার জামিন আবেদন

কুমিল্লা ও নড়াইলের তিন মামলায় হাই কোর্টে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন করেছেন তার আইনজীবীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 May 2018, 07:26 AM
Updated : 20 May 2018, 11:03 AM

বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চে সোমবার এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে বলে খালেদার অন্যতম আইনজীবী মাসুদ রানা জানান।

খালেদার আরেক আইনজীবী এ কে এম এহসানুর রহমান জানিয়েছেন, হাই কোর্টের ওই বেঞ্চের অনুমতি নিয়েই তারা রোববার সকালে সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন করেন।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা হওয়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি।

আপিল করায় ওই মামলায় তিনি সর্বোচ্চ আদালত থেকে চার মাসের জামিন পেলেও তার মুক্তি আটকে আছে আরও কিছু মামলায় গ্রেপ্তার থাকার কারণে।

এর মধ্যে কুমিল্লার দুই মামলায় নাশকতা ও হত্যার অভিযোগ রয়েছে। আর নড়াইলের মামলাটি হয়েছে মানহানির অভিযোগে।

বিএনপি-জামায়াত জোটের অবরোধের মধ্যে ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হায়দার পুলের চৌদ্দগ্রামে একটি কভার্ড ভ্যানে অগ্নিসংযোগ ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পরে ওই দিনই চৌদ্দগ্রাম থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে নাশকতার অভিযোগে মামলা হয়।

২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। খালেদা জিয়াসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয় সেখানে।   

কুমিল্লার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক গতবছর ৯ অক্টোবর এ মামলায় অভিযোগ আমলে নেন। এরপর গত ২২ এপ্রিল খালেদার জামিন চেয়ে আবেদন করা হলে আদালত পরদিন প্রাথমিক শুনানি নিয়ে অধিকতর শুনানির জন্য ৭ জুন তারিখ রাখে।  

এদিকে ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় একটি নৈশকোচে পেট্রোল বোমা হামলায় আট যাত্রী নিহত হন। চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান পরদিন খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে মামলা করেন।

পুলিশ এ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়ার পর আদালত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এর মধ্যে খালেদা ঢাকার দুর্নীতি মামলায় কারাগারে যাওয়ায় কুমিল্লার মামলাতেও তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে কুমিল্লার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত গত ২৮ মার্চ খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেয়। তবে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে খালেদা জিয়াকে কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হয়নি এখনও।

এ অবস্থায় খালেদার আইনজীবীরা গত ২২ এপ্রিল কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দুই মামলায় তার জামিনের আবেদন করলে বিচারক শুনানির জন্য ৭ জুন তারিখ রাখেন। শুনানির তারিখ এগিয়ে আনার জন্য আবেদন করা হলে ১৪ মে তা খারিজ করেন বিচারক।

আর নড়াইলের আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির মামলাটি দায়ের করা হয় শহীদদের সংখ্যা নিয়ে ‘বিরূপ মন্তব্য’ করার অভিযোগে। নড়াইল জেলা পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও নড়াগাতি থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান ফারুকী ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর এ মামলা দায়ের করেন।

আদালতের তলবে হাজির না হওয়ায় ২০১৬ সালের অগাস্টে এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক। আইনজীবীরা এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন করলে গত ৮ মে সে আবেদনের উপর শুননি হয়। কিন্তু শুনানির পর আদালত কোনো রকম আদেশ না দিয়ে ২৫ মে মামলার তারিখ রাখেন বলে খালেদার আইনজীবী মো. এহসানুর রহমান জানান।

তিনি বলেন, “সাধারণত জামিন আবেদনের শুনানি শেষ হলেই আদালত আদেশ দিয় দেয়। কিন্তু খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের আদেশ বিলম্বিত করতে ঝুলিয় রেখেছে। এ বিষয়টি আর খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে হাই কোর্টে জামিন আবেদন করা হয়েছে।”