দলের নেতার্মীদের তিনি বলেছেন, যখনই প্রয়োজন হবে তখনই রাস্তায় নামার জন্য তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
শুক্রবার সকালে রাজধানীতে দলীয় এক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্য আসে।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন সব ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে এই সরকার। হাই কোর্ট জামিন দেওয়ার পরে সুপ্রিম কোর্টে স্থগিত করা হয় এই ৫ বছরের সাজায়- ইতিহাসে এটার নজির নেই। কিন্তু তারা করেছেন। মাত্র ৩/৪ মাসের মধ্যে এই আপিলটাকে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেওয়ার- এটারও নজির নেই।”
জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে কারাগারে পাঠায় আদালত। আপিল করার পর হাই কোর্ট তাকে জামিন দিলেও দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে তা আটকে গিয়েছিল।
সেই আবেদন খারিজ করে আপিল বিভাগ বুধবার খালেদার জামিন বহাল রেখেছে। পাশাপাশি ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে হাই কোর্টে এ মামলার আপিল নিষ্পত্তির আদেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
ফখরুল বলেন, “অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এই মামলাটিকে একটি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা (সরকার) কাজ করছে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে যে, এই নির্দেশ-আদেশগুলো আসছে উচ্চ আদালত থেকে, বিচার বিভাগ থেকে।
“অন্যায়-অত্যাচার-নিপীড়নের বিরুদ্ধে মানুষের যাওয়ার একমাত্র জায়গা ছিল বিচার বিভাগ। দুর্ভাগ্য আমাদের, আজকে সেই বিচার বিভাগকেও সরকার তাদের কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আইনি লড়াই করে তারা সর্বোচ্চ আদালত থেকে খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে এলেও তার মুক্তি হচ্ছে না ‘সরকারের কারণে’।
“তারা (সরকার) মনে করে যে, দেশনেত্রী যদি বাইরে থাকেন তাহলে জনগণের যে বাঁধভাঙা ঢল, সেই ঢলকে তারা প্রতিরোধ করতে পারবে না। আগামী নির্বাচনে দেশনেত্রী যদি অংশ নেন তাহলে সেই নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি কেউ ঠেকাতে পারবে না।”
এ কারণে ‘পরিল্পিতভাবে চক্রন্ত’ করে, ‘মিথ্যা মামলা’ দিয়ে সরকার নির্বাচনের আগেই খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ এই বিএনপি নেতার।
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, “সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে পুলিশের নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও দমনপীড়নের মধ্য দিয়ে সেখানে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। নির্বাচনের দিনে জনগণকে ভোট কেন্দ্রে যেতে না দিয়ে তারা ভোট ডাকাতি করেছে।… এমনকি মার্কিন রাষ্ট্রদূত, তিনি পর্যন্ত বলেছেন যে খুলনার নির্বাচনে যে অনিয়ম হয়েছে তার তদন্ত হওয়া উচিৎ।”
এই অবস্থা থেকে উত্তরণে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংগঠিত হয়ে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান ফখরুল।
“আমি অনুরোধ জানাব, … আপনারা সংগঠিত হোন, যখনই প্রয়োজন হবে আপনারা যেন রাস্তায় নামতে পারেন।”
কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে নিয়ে মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের লেখা ‘কোটি জনতার মা’ গানের সিডির মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে নয়া পল্টনে মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা
মির্জা ফখরুল সিডির মোড়ক উন্মোচন করার পর গানটি শোনানো হয় উপস্থিত সবাইকে।
মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের সভাপতিত্বে, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আখতারুজ্জামান বাচ্চুর পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশরাফউদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল, সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক মনির খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, কণ্ঠশিল্পী নাসির অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন ভুঁইয়া শিশির, মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতি মীর হোসেন মীরু, জয়নাল আবেদীন রতন, জাসাসের সহসভাপতি আহসানউল্লাহ চৌধুরীও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।