এই নির্বাচনে ‘গোল’ দিয়ে হ্যাটট্রিক করবেন হাসিনা: নাসিম

৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করা আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম আগামী নির্বাচনের মাধ্যমেও তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2018, 03:21 PM
Updated : 26 April 2018, 03:25 PM

বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের এক সভা শেষে তিনি বলেন, “এ বছর বিশ্বকাপ ফুটবলের মতো বাংলাদেশে নির্বাচন বিশ্বকাপ হবে।এই নির্বাচনে গোল দিয়েই শেখ হাসিনা হ্যাটট্রিক করবে।”

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপির বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে তারা।

এই সরকারের মেয়াদ শেষে আগামী ডিসেম্বরেই একদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে জুনে শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নাসিম বলেন, “শেখ হাসিনা যা বলেন তাই করেন। পদ্মাসেতু করতে চেয়েছেন করছেন, একাত্তর ও পঁচাত্তরের ঘাতকদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, করেছেন। ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার বিচারও হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

“আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন, ডিসেম্বরেই নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও সাংবিধানিকভাবে ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। কেউ ঠেকাতে পারবে না।”

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে হওয়ায় ২০১৪ সালের ভোট বর্জন করে বিএনপি। এবারও তারা নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবি জানিয়ে আসছে। তবে কার্যকর আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ বিএনপির এই দাবিতে সাড়া দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, “৫ জানুয়ারির নির্বাচন করেছি। বিএনপিকে দেখিয়ে দিয়েছি। প্রতিরোধ চেষ্টা করেও তারা ঠেকাতে পারেনি। আমরা বলেছিলাম, ৫ বছর ক্ষমতায় থাকব। ৫ বছর ক্ষমতা শেষে ডিসেম্বরেই নির্বাচন হবে। এখান থেকে আমরা একচুলও ছাড় দেব না।”

এই নির্বাচন সত্তরের নির্বাচনের মতো হবে মন্তব্য করে প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপির উদ্দেশে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “এবার একটু মাজা সোজা করে দাঁড়ান। সামনে ’৭০ এর মতো নির্বাচন হবে। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নে নৌকার প্রার্থীকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবে।”

তিনি বলেন, “বিএনপি এখন শুধু প্রেসি ব্রিফিং করে। তারা রাস্তায় নামতে ভয় পায়।”

বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে নাসিম বলেন, “তখন কি পুলিশ আমাদের চুমো খেয়েছিল? আন্দোলনে নামলে পুলিশ আদর করে এমন নজির নেই। আন্দোলন সংগ্রাম করে আপনাদের নেত্রীকে মুক্ত করার কথা বলছেন, তাকে ছাড়া নির্বাচনে যাবেন না। তাহলে আন্দোলন করেই আপনাদের নেতাকে মুক্ত করুন।”

ঐতিহাসিক মুজিবনগর সরকার দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ১৪ দলের এই আলোচনা সভায় জিয়া পরিবারের কঠোর সমালোচনা করেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

তিনি বলেন, “এই পরিবারের ঐহিত্য হল- অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করা, দুর্নীতি, ঘুষ ও হাওয়া ভবন সৃষ্টি করা। এই পরিবারের এখন ঐতিহ্য হলো নিজের দেশ ছেড়ে ভিন দেশে আশ্রয় গ্রহণ করা। বাংলাদেশের কাণ্ডারি হওয়ার স্বপ্ন দেখা তারেক রহমান দেশের নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করেন কীভাবে?”

সব ধরনের ষড়যন্ত্র রুখতে ১৪ দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া, জাসদের একাংশের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, অপর অংশের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, জাতীয় পার্টি-জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ সহিদুল ইসলাম, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাহাদৎ হোসেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ বক্তব্য দেন।