তাহলে তারেক রহমান পাসপোর্ট দেখাক: আ. লীগ

তারেক রহমান তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট ‘স্যারেন্ডার’ করে থাকলে তা দেখাতে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছিল বিএনপি; তার পাল্টায় আওয়ামী লীগ বলেছে, খালেদা জিয়ার ছেলে যদি পাসপোর্ট জমা না-ই দেয়, তবে সেই পাসপোর্ট দেখাক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2018, 12:41 PM
Updated : 23 April 2018, 01:13 PM

সোমবার দুপুরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সরকারকে আহ্বান জানানোর পর বিকালে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এই আহ্বান জানান।

এক দশক ধরে যুক্তরাজ্যে থাকা তারেক তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট ফেরত দিয়েছেন বলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম জানানোর পর তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

দুটি মামলায় দণ্ড নিয়ে সপরিবারে লন্ডনে থাকা তারেক এখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

দলীয় চেয়ারপারসনের ছেলেকে নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য ভিত্তিহীন দাবি করে বিএনপি নেতা রিজভী দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “তারেক রহমান যদি তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনে জমা দিয়ে থাকেন, তাহলে সেটি প্রদর্শন করুন।”

এর কয়েক ঘণ্টা পর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসে স্বপন বলেন, “তারেক রহমান সাহেবের কাছে যদি কোনো বাংলাদেশি পাসপোর্ট থেকে থাকে, সেটাই তারা আগে প্রদর্শন করুক।”

ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, “তারেক রহমান ওয়ান-ইলেভেনের সময় মুচলেকা দিয়ে বিদেশে যাওয়ার পরে একবার পাসপোর্ট রিনিউ করেছে বাংলাদেশ হাই কমিশন থেকে। এরপরে তিনি ব্রিটেন হোম অফিসের মাধ্যমে বাংলাদেশ দূতাবাসে তার পাসপোর্ট স্যারেন্ডার করেছেন।

“বাংলাদেশের পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য বাংলাদেশ হাই কমিশনে কোনো আবেদন করেছেন কি না, এটা যদি তারা দেখাতে পারে তাহলে আমরা তাদের বক্তব্যকে স্বাগত জানাব। মূলত তিনি বাংলাদেশের পাসপোর্ট স্যারেন্ডার করেছেন এবং তিনি ব্রিটেনে এখন কি স্ট্যাটাসে আছেন, এটা আপনারা সবাই জানেন।"

বিএনপির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বলেন, “পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কোনো মিথ্যাচার করেননি। তিনি সত্য তথ্য উপস্থাপন করেছেন।”

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে ইতোমধ্যে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন বিএনপির এক আইনজীবী।

স্বপন বলেন, “এ বিষয়ে যদি কোনো আইনি নোটিস দেওয়া হয়, সে নোটিসপ্রাপ্ত হলে সে অবশ্যই যথাযথ জবাব দেবেন। সত্য তথ্য তিনি প্রকাশ করেছেন, সত্য তথ্য প্রকাশ করার জন্য যদি ক্ষমা চাইতে হয় তাহলে সেটা দুর্ভাগ্যজনক বিষয়।"

রিজভীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় স্বপন বলেন, “বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জিয়া পরিবার ধ্বংসের চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে সরকারের প্রতি হাস্যকর-মনগড়া অভিযোগ করেছেন। প্রকৃত পক্ষে জিয়া পরিবার ধ্বংসের নায়ক স্বয়ং তারেক রহমান। জিয়া পরিবার ধ্বংসের কোনো অভিপ্রায় সরকার বা আওয়ামী লীগের নেই।

“দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের মদদদাতা তারেক রহমান। সেই দল ধ্বংসের জন্য অন্য কোনো শক্তির প্রয়োজন নেই।”

রিজভীকে ‘হাইড্রোলিক টকিং ডল’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, "প্রতিদিন মিডিয়ার সামনে শব্দ সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছেন। আপনারা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার পরও জিয়া হত্যার বিচার করতে পারেননি কেন? এমনকি ক্যাবিনেটে সিদ্ধান্ত নিয়ে জিয়া হত্যা মামলাকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন।"

স্বপন বলেন, "একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানিয়ে বিএনপি দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে কলঙ্কিত করেছে।”

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “তারেক রহমানের কাছে শুধু বাংলাদেশ নয়, যুক্তরাজ্যের নাগরিকরাও নিরাপদ নয়।”

দণ্ডিত তারেককে অবিলম্বে বাংলাদেশের হাতে সোপর্দ করতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, নির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, ইকবাল হোসেন অপু।