পাসপোর্ট: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে তারেকের উকিল নোটিস

পাসপোর্ট জমা দেওয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে উকিল নোটিস পাঠিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2018, 09:59 AM
Updated : 23 April 2018, 11:23 AM

‘তারেক রহমান বাংলাদেশের সবুজ পাসপোর্ট হাই কমিশনে জমা দিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন’- এমন বক্তব্য আগামী ১০ দিনের মধ্যে প্রত্যাহার করা না হলে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনে মামলা করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে ওই নোটিসে। 

বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সোমবার দুপুরে রেজিস্টার্ড ডাকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বরাবরে পাঠানো হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের বরাতে কালের কণ্ঠ ও বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রতিবেদন প্রকাশ করায় ওই দুটি পত্রিকার সম্পাদককেও নেটিস দেওয়া হয়েছে বলে তারেকের আইনজীবী জানান।

খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান বিগত সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০০৮ সালে জামিনে মুক্ত হয়ে লন্ডনে যান। এরপর থেকে স্ত্রী-কন্যা নিয়ে তিনি সেখানেই বসবাস করছেন।

হাই কোর্ট দুই বছর আগে মুদ্রাপাচারের এক মামলায় তারেককে পলাতক দেখিয়ে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয় । আর জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয় জজ আদালত।

ওই মামলায় পাঁচ বছরের সাজার রায়ের পর এখন কারাগারে আছেন তারেকের মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার অনুপস্থিতিতে তারেক রহমানেই পদাধিকার বলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে লন্ডন থেকে দল পরিচালনায় নির্দেশনা দিচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শনিবার লন্ডনে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দণ্ডিত আসামি তারেক রহমানকে ‘যেভাবেই হোক’ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, “আমি ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে কথা বলেছি। যে অপরাধী সাজাপ্রাপ্ত, সে কী করে এখানে থাকে? কাজেই তাকে তাড়াতাড়ি ফেরত দেন।”

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও ওই অনুষ্ঠানে তারেকের বিষয়ে কথা বলেন, যা নিয়ে দেশে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে সোমবার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

প্রতিমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, “তারেক জিয়া বাংলাদেশের সবুজ পাসপোর্ট হাই কমিশনে জমা দিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন। সেই তারেক রহমান কীভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করে?”

এর প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ওই ‘উড়ো ও অবান্তর’ বক্তব্যের জন্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তারেকের আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ সন্তানকে নিয়ে ‘এমন অসত্য, বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বক্তব্যে দেশে-বিদেশে সমাজিক ও রাজনৈতিকভাবে তার ‘সম্মান ও মর্যাদাহানী’ ঘটানো হয়েছে।

“নোটিশে আমরা আগামী ১০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট জমা ও নাগরিকত্ব বর্জন সংক্রান্ত বক্তব্যের যথাযথ প্রমাণ দিতে বলেছি। প্রমাণ দিতে না পারলে ওই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে। না হয় তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী এবং দেওয়ানী আদালতে মামলা করা হবে।”

এই আইনজীবী বলেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ‘ভিত্তিহীন বক্তব্যের’ বরাতে প্রকাশিত প্রতিবেদন ওই সময়ের মধ্যে প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে দুটি পত্রিকাকে। তা না হলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।