খালেদার অসুস্থতা নিয়ে নোংরা রাজনীতিতে সরকার: বিএনপি

কারাবন্দি খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তা নিয়ে সরকারের ‘নোংরা রাজনীতি’র নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2018, 08:02 AM
Updated : 21 April 2018, 08:02 AM

সুচিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনকে অবিলম্বে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানোর দাবিও জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জিয়া এতিমখানা দুর্নীতির মামলায় ৫ বছরের দণ্ড নিয়ে গত ফেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের পুরনো কারাগারে বন্দি আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা।

তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ার পর এই মাসের শুরুতে তার চিকিৎসায় একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। তার অসুস্থতা গুরুতর নয় বলে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর বোর্ড জানিয়েছেন।

তবে এই মেডিকেল বোর্ড নিয়ে বিএনপির অনাস্থা রয়েছে।

শনিবার দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য কারাগারে ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে আমরা যে খবর পাচ্ছি। সারা দেশ, জাতি এবং আমরা উৎকণ্ঠিত। 

“সরকারকে বলব, এখনও সময় আছে, অবিলম্বে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিয়ে তাকে তার পছন্দনীয় চিকিৎসক দ্বারা এবং বিশেষায়িত হাসপাতাল ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় দেশনেত্রীর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে তার দায়-দায়িত্ব পুরোটাই সরকারকে বহন করতে হবে।”

‘নোংরা রাজনীতি’ না করে ‘সোজা পথে’ খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, “সংবাদপত্র সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, সরকার কর্তৃক গঠনকৃত একটি মেডিকেল টিম দেশনেত্রীকে পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে অধ্যাপক মালিহা রশিদের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি মেডিকেল টিম তাকে দেখতে যান।

“সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে পেরেছি,  তিনি বেশ কিছু ব্যাধিতে আক্রান্ত, এর মধ্যে এক্যুইট রিউমেটিক আর্থারাইটিস তাকে বেশ কষ্ট দিচ্ছে।”

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নিয়ে খালেদার এক্সরে ও রক্ত পরীক্ষা করানো হলেও এমআরআইসহ আরও পরীক্ষা না করায় উদ্বেগ জানান ফখরুল। 

“তার একটা বিশেষ ধরনের এমআরআই করা জরুরি। তার হোল এবডোমেনের আল্ট্রাসনোগ্রাফ করাও প্রয়োজন।

“কারাগারে দেশনেত্রীর জন্য যে বিছানা, তা তার উপযোগী নয় বলেছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরা তাকে থেরাপি দেওয়ার সুপারিশ করেছেন, যা কারাগারে সম্ভব নয়। যে কক্ষে তাকে রাখা হয়েছে, তা পরিত্যক্ত কারাগারের স্যাঁত স্যাতে একটি কক্ষ। তারা (চিকিৎসকরা) অবিলম্বে তার পছন্দনীয় হাসপাতাল ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য সুপারিশ করেছেন।”

খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষেও কিছু না বলারও নিন্দা জানান বিএনপি মহাসচিব।

তিনি বলেন, সরকার রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে খালেদা জিয়াকে দূরে রাখতেই তাকে বন্দি করে রেখেছে।

পরিবারের সদস্যদের গত ১০ দিন ধরে দেখা করতে না দেওয়ার সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, “ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক  ও মন্ত্রীবৃন্দ যখন বলে ‘হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে’, তখন এটা স্পষ্ট  যে, তারা (সরকার) দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি করে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চান।”

ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এত ভয় কেন? দেশনেত্রীকে মাঠে নামতে দিন, বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দকে সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে দিন, যথেচ্ছ পুলিশ ব্যবহার বন্ধ করুন। দেখুন আপনারা কোথায় দাঁড়াতে পারেন। রাজনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার সাহস আপনাদের নেই।”

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আতাউর রহমান ঢালী,  রুহুল কবির রিজভী, কামরুদ্দিন ইয়াহিয়া খান মজলিশ।