শুক্রবার সকালে রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই দাবি জানান।
তিনি বলেন, “আজকের এক পত্রিকায় দেখছি- কোটা প্রথার বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী সংসদে বললেন, কোটা প্রথা বাতিল। এরপরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রশ্ন আসে কেন? এখানেই কিন্তু জনগণের সন্দেহ।
“আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আপনি সংসদে দাঁড়িয়ে যেটা বলেছেন, আগামী রবি-সোমবার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তা জাতির সামনে উপস্থাপন করেন। আমরা অনতিবিলম্বে এর প্রজ্ঞাপন প্রকাশের দাবি করছি। তা না হলে আমরা বিশ্বাস করি না।”
শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, “সংসদে আপনি আন্দোলনে ছাত্র-ছাত্রীরা যেটা চায়নি, তারও বেশি দিয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ আপনি স্বীকার করেছেন এটা যৌক্তিক। আমরা শুনতে পাচ্ছি যে, যারা আন্দোলন করেছে তাদের সরকারি পেটুয়া বাহিনী হল থেকে বের করে দিচ্ছে, মারধর করছে, মামলা করছে।
“আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে যদি মামলা হয়ে থাকে তা প্রত্যাহার চাই। এই আন্দোলনের সাথে জড়িত যারা তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না, তাদেরকে জোর করে হল থেকে বের করে দেওয়া যাবে না।”
জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভায় গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনের আসন্ন নির্বাচন ‘সরকার ও নির্বাচন কমিশনের জন্য বিরাট পরীক্ষা’ বলে মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, “আমাদের নয়, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের জন্য গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন একটা বিরাট পরীক্ষা। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কী ধরণের হবে সেটা- এই দুই সিটির নির্বাচন থেকে প্রমাণিত হবে। এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে হবে।”
আগামী ১৫ মে গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন হলেও সরকারের তাবেদারি করতে গিয়ে স্বাধীনতা ও ক্ষমতা বাস্তবায়িত করতে পারছে না।
“এখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার যেটা বলেছেন, নির্বাচনে সেনা বাহিনী মোতায়েন করা উচিত। আমরা গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনসহ পরবর্তী প্রত্যেকটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাদের জোর দাবি সেনা মোতায়েন করতে হবে। একই যুক্তি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে এই পর্যন্ত যেহেতু জনগণ ভোট দিতে পারে নাই। জনগণকে সাহস দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীকে মাঠে রাখতে হবে।”
একইসঙ্গে সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহমূলক করার দাবিও তুলে ধরেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নীতিনির্ধারণী নেতা।
“আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে ছাড়া সেই নির্বাচন সম্ভব নয়, সেই নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।”
জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি হুমায়ুন কবীর ব্যাপারীর সভাপতিত্বে ও মনজুর হোসেন ঈসার পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক মনির খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য বিলকিস ইসলাম শিরিন ও আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বক্তব্য দেন।