বৃহস্পতিবার বিকালে বনশ্রীতে এশার এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন ছাত্রলীগের সাবেক ২২জন নেতা।
সুফিয়া কামাল হল ছাত্রলীগের সভাপতি এশাই নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন দাবি করে তার বিচার চেয়েছেন সাবেক এই নেতারা; তার বহিষ্কারাদেশ তুলে নিতেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি জানিয়েছেন আহ্বান।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে সুফিয়া কামাল হলে আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে এশার বিরুদ্ধে।
এশার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী ওই হলে গিয়ে দর্শন বিভাগের এই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
এরপর ওই রাতেই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি এশাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের কথা জানিয়ে বিবৃতি পাঠায়।
এশার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ধরে ধরে নির্যাতন চালাচ্ছিলেন। মোর্শেদা আক্তার নামে এক শিক্ষার্থীর পাও কেটে দেন।
মোর্শেদার রক্তাক্ত পায়ের ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা এশাকে মারধর করে জুতার মালা পরিয়ে দিচ্ছে, এমন ছবিও আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
অন্যদিকে এশার পক্ষে যারা, তারা বলছেন, মোর্শেদার পা কেউ কাটেনি, বরং এশার কক্ষের জানালার কাচে লাথি মারতে গিয়ে তার পা কেটে যায়।
“মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে স্বাধীনতাবিরোধী একটি শক্তি তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে। তার শরীরে প্রচুর মারের দাগ রয়েছে। বারবার আঁতকে উঠছে।
“পরিকল্পিতভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় তার উপর বর্বরতা ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা কীভাবে এইরকম ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটাল? আমরা অবিলম্বে এশার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে তাকে সসম্মানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফ বলেন, “স্বাধীনতার পক্ষে সাহসী ভূমিকা পালনের জন্য এশাকে অভিনন্দন জানাতে গিয়েছিলাম আমরা। আমরা তাকে ফুলের মালা দিয়েছি।
“মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলেছিল এশা। স্বাধীনতাবিরোধী, রাজাকারদের প্রেতাত্মারা এখনও জীবিত আছে। পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়িয়ে তারা এশার উপর বর্বরতা চালিয়েছে।”
এশাকে দেখতে যাওয়া ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের মধ্যে ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি জয়দেব নন্দী, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, সরদার মামুনুর রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান, সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা নবেন্দু সাহা নব, আশিক রন শিহাবুজ্জামান, তরিকুল ইসলাম, ওয়ারেছি চঞ্চল, আব্দুর রহমান জীবন, শারমিন সুলতানা লিলি, আফরিন নুসরাত, জাকিয়া নিপা, জিসান মাহমুদ, রেজাউল হাফিজ রেশিম, শাহিনুর রশিদ সোহেল, হাসানুজ্জামান তারেক, শেখ রাসেল, শারমিন সুলতানা তন্বী।
এদিকে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটনসহ একদল সাবেক নেতা এক বিবৃতিতে এশাকে অপদস্থ করার নিন্দা জানিয়ে তার সম্মানহানির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন।