সেনা মোতায়েনের ক্ষমতা ইসির নেই: কাদের

নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের হাত নেই মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বাস্তবতা বিচেনায় সরকারই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 April 2018, 03:25 PM
Updated : 8 April 2018, 03:25 PM

আগামী জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার নির্বাচন কমিশনের বলে রোববার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পর কাদেরের এই বক্তব্য আসে।

রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে এক সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, “নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব আর সরকারের দায়িত্বটা সংবিধান ঠিক করে রেখেছে। আমাদের সংবিধানে সব আছে। এখানে সংবিধান বহির্ভূত কিছু কারার সুযোগ নেই। নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালন করবে, তখন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে যাবে।

“কিন্তু সেনাবাহিনী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে। সেনাবাহিনী কিন্তু নির্বাচন কমিশনের অধীনে যাবে না। নির্বাচন কমিশন যদি প্রয়োজন মনে করে, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে যদি ব্যর্থ হয়, সে অবস্থায় নির্বাচন কমিশন সরকারকে অনুরোধ করতে পারে।”

এর আগে সিরডাপ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় সিইসি কে এম নূরুল হুদা আগামী জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের পক্ষে নিজের অবস্থান জানিয়ে বলেন, “আগামী জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হওয়া উচিত। বিগত জাতীয় নির্বাচনগুলোতে সেনা মোতোয়েন করা হয়েছিল।

“আমি ব্যক্তিগতভাবে একবারও বলিনি যে সেনা মোতায়েন হবে না। তবে এটা আমার একার সিদ্ধান্তের বিষয় নয়। ইসির আরো পাঁচজন সদস্য আছেন, তারা মিলেই এটা সিদ্ধান্ত নেবেন।”

বিএনপির চাওয়া ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনা সদস্যদের ভোটের মাঠে নামানো হোক। জাতীয় নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকারের ভোটেও তারা সেনা চায়। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অবস্থান এর বিপরীতে। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, “নির্বাচন কমিশনের সেনাবাহিনী নিয়োগের কোনো ক্ষমতা নেই। তারা অনুরোধ করতে পারবেন। বাস্তবতা যেটা আছে, বাস্তব বা প্রয়োজন এবং অবস্থা অনুযায়ী সেনাবাহিনী অনেক সময় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করে। যদি প্রয়োজন হয় তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করতে পারে। এখানে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হবে কি না এটা নির্ধারণ করবে সরকার বাস্তব পরিস্থিতির প্রয়োজনে।”

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার নামে সরকার নাটক করছে- বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে জোর করে নিয়ে আসার কি প্রয়োজন? এতে অনেক আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকদের মুভ করতে হয়। এখানে হ্যাসেলেরও সম্ভাবনা থাকে। বিএনপির নেতাকর্মীরা তো হ্যাসেল একটা করতে চায়, তারা জানান দিতে চায় আমরা মাঠে আছি।

“নিশ্চয়ই চিকিৎসকরা প্রয়োজন মনে করেছেন এবং সেখানে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তাকে দেখেছেন। এখন যদি এটা না করত তাহলে যদি এর জন্য বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতো, তখন কি হতো বলেন?”

সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের নির্বাচনী প্রচারের বিষয়ে বলতে গিয়ে ভারতের উদাহরণ টানেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বলেন, “পাশের দেশ ভারতে বিধান সভার নির্বাচনের সময় সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ক্যাম্পেইনে অংশ নিতে পারে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী, এমপিরা কেন স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ক্যম্পেইন করতে পারবে না। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সাথে কথা আছে।

“এমন কি অসুবিধা যে, এমপিরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ক্যম্পেইন করতে পারবে না। এ বিষয়ে ইসির সাথে সিরিয়াসলি আলোচনা করতে চাই। আমাদের কথাগুলো তাকে জানাব। খুব শিগগিরই আওয়ামী লীগের একটা প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে  যাবে, কথা বলতে।”

সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমিরের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সভায় বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য খারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহম্মেদ।