চার সদস্যের এই মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা রোববার বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন।
বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন করছেন।
“আজ তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর নতুন করে কিছু ওষুধ যুক্ত করা হয়েছে। আর কিছু বিষয় পরীক্ষার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
খালেদা জিয়ার শারীরিক সমস্যাগুলো কী- জানতে চাইলে এই চিকিৎসক বলেন, “একজন রোগীর রোগের বিষয়টি একান্ত তার। সে বিষয়ে জানানো ঠিক নয়।”
৭৩ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্র, চোখ ও হাঁটুর সমস্যা রয়েছে বলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা আগে জানিয়েছিলেন। তাকে নানা রকম ওষুধ খেতে হয় নিয়মিত।
বিএনপি নেতারা বলেছেন, তাদের নেত্রীর জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন কিংবা অসুস্থতার বিষয়ে তাদের কিছু জানানো হয়নি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শামসুজ্জামান নেতৃত্বাধীন বোর্ডের সদস্যরা দুপুরে এক ঘণ্টা পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন সড়কের কারাগারে ছিলেন।
বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন ঢাকা মেডিকেলের ডা. মনসুর হাবীব (নিউরোলজি), টিটু মিয়া (মেডিসিন) ও সোহেলী রহমান (ফিজিক্যাল মেডিসিন)।
কারা কর্তৃপক্ষের আবেদনে শনিবার এই মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বোর্ড খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখেছে। বোর্ডের পরামর্শ এবং পরবর্তী করণীয় বিষয়টি কারা কর্তৃপক্ষকে কাল (সোমবার) লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে। তারাই সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।”
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের সাজার রায়ের পর থেকে পরিত্যক্ত ওই কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা।
বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা কয়েকবার গেলেও কারাফটক থেকে তাদের ফেরত আসতে হয়। কারা কর্মকর্তারা তাদের বলেছিলেন, প্রয়োজন হলে তারাই খবর দেবেন।
নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা আপিল করলেও সেই বিষয়ে আদেশ মে মাসের আগে হচ্ছে না বলে সেই পর্যন্ত তার মুক্তি পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এর মধ্যে গত সপ্তাহে (২৯ মার্চ) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বন্দি খালেদার সাক্ষাৎ স্থগিত করে অসুস্থতার কথা বলা হয়।
সেদিন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, তাদের চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করার জন্য মহাসচিব রওনা হয়েছিলেন। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ জানায় যে খালেদা অসুস্থ থাকায় সাক্ষাৎ স্থগিত করা হয়েছে।
কারা কর্তৃপক্ষের কেউ খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বিষয়ে তখন সাংবাদিকদের কাছে মুখ খোলেনি।
এরপর সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল তার নেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সুচিকিৎসার জন্য তার মুক্তি দাবি করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার দাবিও জানান তিনি।
তাদের উদ্বেগের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, “তিনি (খালেদা) আগে যেমন ছিলেন তেমনই আছেন।”