শনিবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “মানুষ এই সরকারের ওপর পুরোপুরি বিরক্ত হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষ এখন পরিবর্তন চায়। সেই পরিবর্তনটা.. আমাদের রাজনৈতিক দল হিসেবে দায়িত্ব হচ্ছে সেটাকে গুছিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করা। আমরা সেই চেষ্টাই করছি, আমরা সেই কাজটাই করছি।
“আমি স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, আজকে প্রয়োজন একটাই- একটা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করা। দলমত নির্বিশেষ- বর্ণ নির্বিশেষে আজকে আমাদেরকে এই ফ্যাসিস্ট ভয়াবহ দানবকে নামানোর জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক সমর্থক ‘সাদা দল’ এর উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই আলোচনা সভা হয়।
জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির জন্য পেশাজীবীদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান ফখরুল।
জার্মান একটি সংস্থার বিচারে বাংলাদেশকে স্বৈরতান্ত্রিক দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এরাই (আওয়ামী লীগ) ১৯৭৫ সালে একদলীয় বাকশাল করেছিল। এরা সব রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করে দিয়ে একটা দল করেছিল। এখন সেইদিকে যাচ্ছে। ওই লেবাসটা পোশাক দিয়ে ঢেকে রেখেছে।
“সেটা আবার গতকাল জার্মানির একটি প্রতিবেদনের মধ্যে তাদের মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছে। তারা পরিষ্কার বলছে যে, এখন বাংলাদেশ সরকার পুরোপুরিভাবে স্বৈরাচার। এটাকে ফ্যাসিবাদ বলা উচিৎ।”
আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, “শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদী শাসন চালাচ্ছেন বিচার বিভাগের সহায়তায়। এটা ইউনিক কাজ। পৃথিবীতে কোনো মুসলিনি-হিটলার বিচার বিভাগের সহায়তাক্রমে তাদের ফ্যাসিবাদ চালান নাই। শেখ হাসিনা এটা চালিয়ে যাচ্ছেন।”
সাদা দলের আহ্বায়ক মো. আখতার হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, এজেডএম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক তাজমেরী এস ইসলাম, অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক একেএম আজিজুল হক, সাংবাদিক এম আবদুল্লাহ, সেলিম ভুঁইয়া, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ড. আরিফ বিল্লাহ, ড. সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।
ব্যর্থতা আড়াল করতে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদার কথা বলে সরকার জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ।
সন্ধ্যায় জাতীয় প্রসে ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “দেশের মানুষ গণতান্ত্রিক চর্চা দেখতে চায়, ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়। যতদিন পর্যন্ত সেটা না হবে ততদিন পর্যন্ত এই উন্নয়নশীলতা একটি তকমা ছাড়া আর কিছুই না।”
বিশ্বের ১২৯টি দেশের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে জার্মান সংস্থা 'বেরটেলসম্যান স্টিফটুং'র করা ‘স্বৈরতান্ত্রিক দেশ’র তালিকায় বাংলাদেশের ঢোকার খবরের প্রতিক্রিয়ায় মওদুদ বলেন, “আজকে উন্নয়নশীলতার কথা বলে সরকার উৎসব করছে। আর দেখেন পৃথিবীর ৫টি স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের মধ্যে বাংলাদেশ নিচ থেকে পাঁচ-এ।
“এটা আমার কথা নয়, জার্মানির একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থার প্রতিবেদনে এটা বলা হয়েছে। তারা বলছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নাই। সারা বিশ্বে আজকে স্বীকৃত বাংলাদেশে একটি স্বৈরাতান্ত্রিক সরকার রয়েছে। এর চাইতে অভিশাপের বিষয় আর কিছু হতে পারে না।”
খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদের উদ্যোগে এই আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিক শিকদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।