শুক্রবার বিকালে মলচত্বরে হামলায় আহত এস এম কামাল উদ্দিন, মেশকাত হোসেন ও সাগর রহমানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে কামাল সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, মেশকাত সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সাবেক শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক এবং সাগর স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী।
আহত কামাল উদ্দিনের অভিযোগ, আগামী ৩১ মার্চ ঘোষিত তারিখে ছাত্রলীগের সম্মেলন চাওয়ায় সংগঠনের সূর্যসেন হল শাখার সভাপতি সারোয়ার আহমেদের অনুসারীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সারোয়ার বলেছেন, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হামলায় তিন ছাত্র আহত হওয়ার কথা শুনেছি। সেখানে লোক পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সম্মেলন ঘিরে ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীদের তৎপরতার মধ্যে বৃহস্পতিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন। সেখান থেকে মধুর ক্যান্টিনে ফিরে তারা জানান, নির্ধারিত ওই তারিখে ছাত্রলীগের সম্মেলন হচ্ছে না। সম্মেলন ‘যথাসময়ে’ হবে।
তাদের এই ঘোষণার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটিতে বিভিন্ন পদে থাকা কয়েকজন নেতা। সম্মেলন পিছিয়ে যাওয়ার জন্য সংগঠনের শীর্ষ দুই নেতাকে দায়ী করে বক্তব্য দেন তারা।
পরদিনই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের এক পক্ষের মারধরের শিকার হলেন সম্মেলনের দাবিতে সোচ্চার তিন নেতাকর্মী। এরা তিনজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে কামাল স্নাতকোত্তর এবং মেশকাত ও সাগর চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। হামলায় মেশকাত ও সাগর মাথায় আঘাত পেয়েছেন। কামালের আঘাত ততটো গুরুতর নয়।
ঢাকা মেডিকেলে কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা তিন বন্ধু মিলে খাওয়া-দাওয়া শেষে সূর্যসেন হল থেকে বের হচ্ছিলাম। এমন সময় এ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার আহমেদের অনুসারী ২০-২৫ জন নেতাকর্মী সাগরের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। সাগরকে বাঁচাতে গেলে আমরাও আক্রমণের শিকার হই।
সম্মেলনের পক্ষে কথা বলায় এ হামলা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “তারা হামলার সময় শুধু বলছিল, ‘তোরা সম্মেলন চাস? সারওয়ার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কথা বলিস?’
“তারা সম্মেলনের বিষয়টাকে তুলেই মারধর করেছে।”
সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. ইমরান হোসেন সাগর (স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট), উপ-কর্মসূচি বিষয়ক সম্পাদক মো. রাসেল রানা সোহেল (টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগ), উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মো. আসাদ আহমেদ (মনোবিজ্ঞান), সারওয়ারসহ (ব্যাংকিং) হল শাখা ছাত্রলীগের ২০-২৫ জন নেতাকর্মী তাদের ওপর হামলায় অংশ নেয় বলে অভিযোগ করেন কামাল।
তার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সারওয়ার আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার নির্দেশে এমন কিছু হয়নি। আমি জানতামই না এ সম্পর্কে। আমার অনুসারী কেউ জড়িত থাকলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।”
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান বলেন, “যারা এসব বলেছে যে, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এ রকম হয়েছে তারা মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য ছড়িয়ে ছাত্রলীগকে বিব্রত করতেই করছে।
“যদি কেউ এতে জড়িত থাকে, তবে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”