শনিবার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে লাঠিপেটা ও জলকামান থেকে পানি ছোড়ার পর আরও কয়েকজন নেতা-কর্মীকেও আটক করে পুলিশ।
সকাল ১১টায় এই কর্মসূচি শুরুর আগেই বিএনপির কার্যালয় ঘিরে জলকামান ও সাঁজোয়া যান নিয়ে অবস্থান নেয় পুলিশ।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কয়েকশ কর্মী কার্যালয়ের সামনে সড়কে কালো পতাকা নিয়ে বসে পড়লে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে।
লাঠিপেটায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী ও সাবেক সংসদ সদস্য নীলোফার চৌধুরী মনিসহ কয়েকজন আহত হন।
এসময় জলকামান থেকে রঙিন পানিও ছুড়তে থাকে পুলিশ, যাতে আক্রান্ত হন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও।
বিএনপিকর্মীরা তখন কার্যালয়ের ফটক বন্ধ করে ভেতর থেকে স্লোগান দিতে থাকে।
সকাল ১১টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান কার্যালয়ে ঢোকার সময় আরেক দফা আক্রমণ চালায় পুলিশ। সাবেক ছাত্রনেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলকে তখন পুলিশ আটক করে। আটক করা হয় কেন্দ্রীয় নেতা হালিমা নেওয়াজ আরলিকেও।
পুলিশি হামলা এবং নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে দুপুর ১২টার দিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সংবাদ সম্মেলনের পর নিচে নেমে এলে পুলিশ আটক করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আলালকে।
আলালকে গ্রেপ্তারের সময়ে পুলিশ আচরণের নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বিকালে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সাবেক এমপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের সাথে পুলিশ যে নৃশংস আচরণ করেছে তা মনুষ্যত্বহীন। তার ঘাড় জাপটে ধরে শার্টের কলার ও বুকের-পিঠের কাপড় টেনে সিএনজিতে তোলা হয়।
“একজন শিক্ষিত ও মননশীল রাজনীতিবিদের সাথে পুলিশের এই আচরণ আমাদের সেই অভিযোগটি প্রমাণিত হলো যে, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ দ্বারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভরা হয়েছে।”
এর আগে দুপুরে একই স্থানে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল গ্রেপ্তার সব নেতা-কর্মীর মুক্তি দাবি করেন।
তিনি বলেন, “পুলিশ বেপরোয়াভাবে নেতা-কর্মীদের বেধড়ক লাঠিচার্জ এবং টেনে হিঁচড়ে ভ্যানে তুলতে শুরু করে। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বিনা উসকানিতে হামলা চালিয়ে প্রমাণ করল দেশ দুঃশাসনের করাল গ্রাসে।”
এদিকে ঘটনাস্থলে থাকা ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ কমিশনার এ এস এম শিবলী নোমান সাংবাদিকদের বলেন, “সড়ক দখল করে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটানো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হতে পারে না। তাই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।”
কর্মসূচি পণ্ড করে দেওয়ার পর নয়া পল্টনের বিভিন্ন গলিতে অভিযান চালিয়েও বিএনপিকর্মীদের আটক করে পুলিশ।
রিজভী বলেন, বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে দেড় শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আহত হয়েছেন অন্তত ২৩০ জন।