দাম্ভিকতা বাদ দিয়ে সংলাপে আসুন, সরকারকে বিএনপি

নিরপেক্ষ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে ‘দাম্ভিকতা’ পরিহার করে সংলাপের উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Feb 2018, 12:08 PM
Updated : 20 Feb 2018, 12:08 PM

মঙ্গলবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “আমি আহ্বান জানাতে চাই, অহংকার, দাম্ভিকতা বাদ দিয়ে দেশকে রক্ষা করার জন্যে, এই সংকট কাটিয়ে উঠবার জন্যে অবিলম্বে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করুন। আগামীতে যাতে একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে তার ব্যবস্থা করুন।”

গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যকে ‘শিষ্টাচারবিবর্জিত’ অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, “কালকে প্রধানমন্ত্রী যখন কথা বললেন, তার স্বরের মধ্যে, তার সুরের মধ্যে, তার কথার মধ্যে, তার ভাষার মধ্যে আমরা সেই একনায়কের ভাষা শুনতে পেলাম, একনায়কের চেহারা দেখতে পেলাম।

“আমরা সেই অহংকার দেখতে পেলাম, আমরা সেই দাম্ভিকতা দেখতে পেলাম। জনগণের জন্য যে শ্রদ্ধাবোধ, মানুষের জন্য যে ভালোবাসা, মানুষের কল্যাণের জন্য যে বডি ল্যাংগুয়েজ সেটা আমরা দেখতে পেলাম না।

“একজন নেত্রী যিনি দীর্ঘকাল সংগ্রাম করেছেন, দেশের তিন বার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, বিরোধী দলের নেত্রী ছিলেন, যিনি জীবনে কখনো নির্বাচনে পরাজিত হননি তার সম্পর্কে যে কথাগুলো আপনি বলছেন, এটা কোনো রাজনীতির ভাষায় আছে আমি জানি না। উনি তো একজন, মহিলা আরেক মহিলা তার সম্পর্কে এভাবে কথা বলা কোন ধরনের শিষ্টাচার আমরা জানা নেই। এটা সারাদেশের মানুষকে অত্যন্ত ব্যথিত ও মর্মাহত করেছে।”

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলার সঙ্গে খালেদা জিয়ার কোনোভাবে সংশ্লিষ্টতা নেই দাবি করে তাকে ‘অন্যায়ভাবে জোর করে’ সাজা দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলায় ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) এর উদ্যোগে জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই আলোচনা সভা হয়।

এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির নিতাই রায় চৌধুরী, ফজলুল হক মিলন, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জাগপা‘র রেহানা প্রধান, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, এনপিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, বেলাল আহমেদ, এম অহিদুর রহমান ও ফরিদ উদ্দিন বক্তব্য দেন।

নেত্রীর মুক্তির দাবিতে গণঅভ্যুত্থান

‘সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে’ খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি বলেন, “সরকারের উদ্দেশ্য একটাই, নেত্রীকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া এবং আগামী নির্বাচনে যাতে তিনি ও তার দল বিএনপিসহ জাতীয়তাবাদী শক্তি যাতে অংশ নিতে না পারে। এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি করে তাকে মুক্ত করে আনতে হবে। তার মুক্তির জন্য সকলে সোচ্চার হোন।”

সংগঠনের সভাপতি মাহমুদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় এই কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আখতার হোসেন খান, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের শওকত মাহমুদ, এম আবদুল্লাহ, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের একেএম আজিজুল হক, এজেডএম জাহিদ হোসেন, জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামসুল আলম, শিক্ষক কর্মচারি ঐক্যজোটের জাকির হোসেন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

এই মানববন্ধনে পেশাজীবী নেতাদের মধ্যে সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী, অধ্যাপক সিরাজউদ্দিন আহমেদ, আবদুল হালিম ডোনার, অধ্যাপক খলিলুর রহমান, অধ্যাপক মামুন আহমেদ, সাংবাদিক এম এ আজিজ, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ইলিয়াস খান, কাদের গনি চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ও জাহানারা বেগম উপস্থিত ছিলেন।