রোববার সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় জাসদ সভাপতি বলেন, “অন্তর্ভুক্তির নির্বাচন সব দলের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। তবে গণতন্ত্রের নামে অপরাধী, হত্যা, খুনের আসামি-দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিকে হালাল করে না।
“নির্বাচনের দরজা অপরাধী ছাড়া সকলের জন্য খোলা আছে। ইনক্লুসিভ নির্বাচনে অপরাধীর অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ নেই।”
নির্বাচন দর কষাকষির বিষয় নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে এখন কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাকে কারাগারে রেখে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না বলে রোববার দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমি বিএনপির পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি দলের নেতা-কর্মীদের একমাত্র প্রেরণা। ‘উইদাউট খালেদা জিয়া, নো ইলেকশন’- এটাই এখন জনগণের উচ্চারণ।”
তার এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পর সংসদে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী ইনু।
তিনি বলেন, “খালেদা জিয়ার সাজার পর জামাতকে নিয়ে বিএনপি আবার মাঠে এসেছে। বিএনপির এজেন্ডা হচ্ছে, নির্বাচনকে বানচাল করে অস্বাভাবিক সরকার আনা। এজন্য সহায়ক সরকার প্রস্তাব মাঠে রাখা হয়েছে।
“তাদের সহায়ক সরকারের কোনো রূপরেখা নেই। সংবিধানে এই বিধান নেই। এই সহায়ক সরকারের প্রস্তাব নির্বাচন বানচালের একটি উছিলা মাত্র। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সাজা। এই সাজাকে উছিলা করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি এই বছরের শেষদিকে অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখেও নির্দলীয় সরকারের দাবি জানিয়ে আসছে।
এ নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের মধ্যেই দণ্ডিত হয়ে কারাবন্দি হয়েছেন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া।
হাসানুল হক ইনু বলেন, “অশান্তির শক্তিগুলোকে সাথে নিয়ে বিএনপি ও খালেদা জিয়া রাজনীতির মাঠে রয়েছে। মানুষ মনে করে, যতই ভোল পাল্টাক, নির্বাচনের জন্য মায়াকান্না করুন না কেন তিনি কিন্তু বদলাননি, শোধরাননি।”
বিএনপিকে ‘রাজনীতির বিষবৃক্ষ’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমান পঁচাত্তরের পরে বিএনপি নামের বিষবৃক্ষ রোপন করেছিল। খালেদা জিয়া তা সার-পানি দিয়ে বড় করেছে। এই বিষবৃক্ষ রেখে গণতন্ত্রের বাগান সাজানো চলে না, তা সম্ভবও নয়। বিএনপি নামক বিষবৃক্ষ নিয়ে গণতন্ত্র নিরাপদ হতে পারে না। গণতন্ত্রের বাগানে এই বিষবৃক্ষ থাকতে পারে না।
“একাত্তরে পাকিস্তান ছাড়ার মতো জাতি আজ একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সিদ্ধান্ত নিতে হবে গণতন্ত্র চাইলে বিএনপিকে বর্জন করতে হবে। জামাত-জঙ্গিকে নির্বাচনের রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে।
“দেশকে মুক্তিযুদ্ধের পথে রাখতে হলে কোনো দর কষাকষির সুযোগ না দিয়ে, মায়াকান্নায় মন নরম না করে অন্তর্ভুক্তির নামে অপরাধীদের ছাড় দেওয়ার প্রস্তাবে বিভ্রান্ত না হয়ে জঙ্গি দমন ও অপরাধীদের বিচার অব্যাহত রাখতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে।”