খালেদাকে আদালতে নেওয়া হচ্ছে না: কারা কর্মকর্তা

কারাবন্দি খালেদা জিয়ার রোববার একটি মামলায় আদালতে হাজিরার তারিখ থাকলেও তাকে নেওয়া হচ্ছে না বলে একজন জ্যেষ্ঠ কারা কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

লিটন হায়দার অপরাধ বিষয়ক প্রধান প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Feb 2018, 03:45 PM
Updated : 17 Feb 2018, 06:54 PM

তবে কেন তাকে আদালতে নেওয়া হবে না সে বিষয়ে কিছু বলেননি জ্যেষ্ঠ জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হওয়ার পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নাজিমউদ্দিন রোডে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদাকে।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২ এ বিচারাধীন বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় রোববার তার হাজিরার দিন রয়েছে। আদালতে হাজির করা হলে কারাবন্দি হওয়ার ১০ দিন পর প্রথম প্রকাশ্যে দেখা যেত বিএনপি চেয়ারপারসনকে।

দুই বছর আগে সব বন্দিকে সরিয়ে নেওয়া নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো এই কারাগারে তাকে রাখার কারণ হিসেবে আদালতে আনা-নেওয়ায় কম দূরত্বের সুবিধার কথা বলেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও কারা কর্মকর্তারা।

তার বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলার বিচারও চলছে এই কারাগারের পাশেই বকশীবাজার এলাকায় আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত-২ এর অস্থায়ী এজলাসে।

খালেদা জিয়াকে রোববার আদালতে নেওয়ার কোনো প্রস্তুতি না থাকার কথা আগেই জানিয়েছিলেন তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের একজন কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে শনিবার বিকালে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বোরবার তাকে আদালতে নেওয়া হচ্ছে না। নেওয়া হলে তার প্রস্তুতি থাকত। সে রকম কোনো প্রস্তুতির নির্দেশনা নেই।”

এ বিষয়ে জানতে জ্যেষ্ঠ জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবিরের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।

পরে রাতে মোবাইলে এসএমএসে খালেদা জিয়াকে আদালতে নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি ফিরতি এসএমএসে লেখেন, “না।”

খালেদা জিয়াকে আদালতে নেওয়া হচ্ছে না বলে তার আইনজীবীরা আঁচ করেছিলেন।

কারা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীরের ওই বক্তব্য আসার আগে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খালেদা জিয়াকে এজলাসে নেওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না। কোনো খবরও জানি না। উনাকে সম্ভবত নেবে না।”

এদিকে এখনও খালেদা জিয়ার দণ্ডের রায়ের সত্যায়িত কপি না পাওয়ায় তার জামিন আবেদন করতে পারেননি আইনজীবীরা।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কারাগার থেকে তাদের নেত্রীর মুক্তি বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে সরকার।

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তার মন্ত্রিসভার ১০ সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা হয়। ওই বছর ৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেয় দুদক।

চীনা প্রতিষ্ঠান কনসোর্টিয়াম অফ চায়না ন্যাশনাল মেশিনারিজ ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয়েছে এ মামলায়। বর্তমানে মামলাটি অভিযোগ গঠনের শুনানির পর্যায়ে রয়েছে।