ঘরের মধ্যেও স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা নেই: রব

দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কথা তুলে ধরতে গিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেছেন, ঘরের মধ্যে অবস্থান করলেও এখন স্বাভাবিক মৃত্যুর কোনো নিশ্চয়তা নেই।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Feb 2018, 11:31 AM
Updated : 16 Feb 2018, 11:31 AM

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে সরকারের সমালোচনা করে তিনি কথা বলেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা দেশে ছিলেন তাদের জীবন বেশি হুমকিতে ছিল জানিয়ে রব বলেন, “কখন মারা যাবেন, আজকের মত অবস্থা। ঘরে থেকেও শান্তিতে মৃত্যুর কোনো নিশ্চয়তা নাই। আজকে বাংলাদেশে কোনো নাগরিকের ঘরের মধ্যে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি আছে বলে আমি মনে করি না।

“ছয় বছরের শিশু ধর্ষিত হচ্ছে, ১০ জন লোকের হাতে সারা দেশের টাকা, লুটপাট, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হত্যা, গুম, খুন, অপহরণ- এসব দেখে কি মনে হয় এদেশে একদিন মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল? আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম? বিশ্বাস করা যায়?”

নিজের ১০ বছরের কারাজীবনের বর্ণনা দিয়ে রব বলেন, “আগে যারা মারছে লাঠি, তারা আবার কিন্তু লাঠি খাইছে। যারা জেল উদ্বোধন করছে, তাদেরকে জেলে যেতে হয়েছে। যারা স্পেশাল ক্ষমতা আইন তৈরি করেছিল, তাদেরকে স্পেশাল ক্ষমতা আইনে জেলে যেতে হয়েছিল।

“এগুলো থেকে যদি আমরা শিক্ষা গ্রহণ করি না, প্রতিহিংসা…। যারা আজ করতেছেন, যদি সরকার বদল হয়, ক্ষমতা বদল হয়, আপনারা যদি করেন এক হাজার বার, তারা করবে ১০ হাজার বার।”

মুক্তিযোদ্ধা শাহ আবু জাফরের ‘আমার স্মৃতিতে ফরিদপুরের মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধীনতা যুদ্ধ’ এবং ‘জেলখানার স্মৃতিকথা ফরিদপুর থেকে কাশিমপুর’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে বক্তব্য দিচ্ছিলেন রব।

অনুষ্ঠানে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “সরকারে পক্ষ থেকে মন্ত্রীরা আশ্বস্ত করেছেন এখনই ৩২ ধারা কার্যকর করা হবে না। তবে আমরা এতে আশ্বস্ত হতে পারছি না, কারণ ৩২ না থাকলেও ৫৭ তো আছে।

“এই সমস্ত আইনের মধ্যে এ রকম করে হাত-পা বাঁধা আছে। আপনার মনের মধ্যে যেসব প্রশ্ন সঙ্গতভাবে বুদবুদের মত ফুটবে, সেগুলো আপনি বলতে পারবেন না।”

মান্না বলেন, “আমাদের দেশে ইতিহাস চর্চা মানে সত্যের কান টেনে লম্বা করে দেওয়া, মিথ্যাকে সত্যের জায়গায় বসিয়ে দেওয়া এবং সেটা নিয়েই গর্ব করা, অহংকার করা।

“বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কি সেটা কে বলতে পারবেন? এ বছর কি হবে বলতে পারবেন? কে বলতে পারবেন? রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বলতে পারবেন? যিনি তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন খালেদা জিয়া উনি কি বলতে পারবেন? কি একটা দেশে আমরা বাস করি! আজ থেকে এক মাস পরে কি হবে তা আমরা বলতে পারি না।”

খালেদা জিয়াকে ডিভিশন না দিয়ে সাধারণ কয়েদির মত জেলে রাখার কঠোর সমালোচনা করেন এক সময়ের আওয়ামী লীগ নেতা মান্না।

“একজন রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসন, তার স্বামী একজন মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন, তিনি জেলখানার মধ্যে আছেন ডিভিশন ছাড়া, এখন পেয়েছে বটে কিন্তু প্রথমে একটু চুলকালেন তো বটে। একটু বুঝালেন তাকে দেখ কি পারি, চাইলে কি না করতে পারি, সোজা থাকুন, সবাই সোজা থাকে না।”

“জেল কোডে কি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ডিভিশন পান না,” প্রশ্ন রাখেন মান্না।

অনুষ্ঠানে বিএনপিপন্থী শিক্ষক নেতা সেলিম ভুঁইয়া, বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের পরিচালক নেসার আহমেদ বক্তব্য দেন।