জিয়া এতিখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে আদালতের দেওয়া রায়ের প্রতিক্রিয়ায় এই মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের এক সময়ের মিত্র রাজলনৈতিক দলটির এই নেতা।
সেলিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা রাজনৈতিক ও দলীয় বিবেচনার উর্ধ্বে সব দুর্নীতিবাজদের বিচার চাই এবং দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চাই।
“খালেদা জিয়াকে আড়াই কোটি টাকার দুর্নীতির মামলায় শাস্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আরও শত শত হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ সরকারদলীয় লোকজন এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে রয়েছে।
“খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা যদি রাজনৈতিক মদদে না হয়ে প্রকৃত দুর্নীতির কারণে হয়ে থাকে- তাহলে সরকারকে তার নিজ দলের অগণিত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে তার প্রমাণ দিতে হবে।"
সিপিবি সভাপতি বলেন, “ফারমার্স ব্যাংকের মালিকদের কেন সাজা হচ্ছে না? হল-মার্ক কেলেঙ্কারির সাথে যুক্তদের কেন সাজা হচ্ছে না?”
রায়কে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর তৎপরতার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “দেখা গেল, সরকারের কার্যকলাপের ফলেই জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল।”
মিছিল-সমাবেশে পুলিশের নিষেধাজ্ঞার পরও সরকারি দল ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মহড়া-সমাবেশ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এই বাম নেতা।
তিনি বলেন, “পুলিশ কেন কোনো ব্যবস্থা নিল না। এ থেকেই প্রমাণ হয় যে, আইনশৃঙ্খলবাহিনীকে পক্ষপাতহীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না।"
আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী জাসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানও অন্যান্য আর্থিক কেলেঙ্কারির বিচার দ্রুত করার দাবি জানান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এ রায়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা পেল যে, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়।"
এ রায় হল-মার্ক কেলেঙ্কারি, ব্যাংক লুটপাটসহ অন্যান্য দুর্নীতি মামলাগুলোর বিচার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান।
জাসদের আরেক অংশের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বলেন, "এটি একটি দুর্নীতির মামলা। আদালত রায় দিয়েছে। সুতরাং এ রায়ে রাজনৈতিক দলের কারও কিছু করার নেই।
“দুর্নীতি করলে সাজা হবে, এটাই বাস্তব কথা। সেই কাজটিই হয়েছে।”
মামলাটি যথেষ্ট স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
“এটি তো একদিনের মামলা নয়। মামলাটি হয়েছে সেই ২০০৮ সালে। দীর্ঘদিন ধরে এ মামলাটি চলছিল। প্রকাশ্যে মামলাটি চলছিল, এখানে কোনো গোপনীয়তা করা হয়নি। ফলে সমস্ত কিছুই সাদা-কালোর মধ্যেই আছে বলে আমরা দেখতে পারি।"
রায়ের পর ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতাপ্রত্যাশীদের মুখোমুখি সাংঘর্ষিক অবস্থান আরও বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এ মামলার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বাদানুবাদ, শাসকদল সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বহীন কথাবার্তা ও মহড়া, সারা দেশে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গণগ্রেফতার-টহল জনমনে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
“এ রায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনী প্রক্রিয়া পরিস্থিতি ও পরিবেশকে প্রভাবিত করার আশংকা রয়েছে।”