নারীর জাগরণ ঠেকাতেই নির্যাতন বাড়ছে: সুলতানা কামাল

নারীর জাগরণ ও অগ্রযাত্রা সহ্য করতে না পেরেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর প্রতি নির্যাতন বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Jan 2018, 01:23 PM
Updated : 19 Jan 2018, 03:17 PM

রাজধানীতে শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে তুলে ধরা এক প্রতিবেদনের তথ্যের প্রতিক্রিয়ায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা একথা বলেন।

সুলতানা কামাল বলেন, “পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর জাগরণ ও উত্থান যখন তারা ঠেকাতে পারে না, তখন তারা নারী নির্যাতনও অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয়, যেই অবস্থাটা এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি।”

এর আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই অনুষ্ঠানে মহিলা ঐক্য পরিষদের সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়া সাহা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন।

সেখানে গত বছর দেশে ১৫ সংখ্যালঘু নারী গণধর্ষণের শিকার, ১৮ জনের ধর্ষিত হওয়ার ও ১১ জনের ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হওয়ার তথ্য উপস্থান করা হয়।

আইনজীবী সুলতানা কামাল বলেন, দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি বিরাজ না করলে ও দীর্ঘসূত্রিতা না থাকলে এবং সত্যিকারের অপরাধীদের চিহ্নিত করে যথা সময়ে শাস্তির আওতায় আনা হলে ঘটনাগুলো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তো না ।

“সেখানে দেখতে পাচ্ছি, রাষ্ট্রের যে ভূমিকা ছিল, রাষ্ট্র তার ভূমিকা সেই রকমভাবে পালন করেনি।”

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের তৈরি ‘সংখ্যালঘু নির্যাতনের’ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গেল বছর সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের একহাজারের বেশি ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করা হয়।

সুলতানা কামাল বলেন, “গত তিন বছরে এমন কয়েক হাজার ঘটনা ঘটেছে, সেখানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের উপর নানা ধরণের অত্যাচার করা হয়েছে।

“সেই পরিসংখ্যান থেকে বলা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে ৫টি এরকম ঘটনা ঘটেছে। সেগুলোতে নিষ্ঠুরতা, বর্বরোচিত ও অসভ্য কিছু আচরণেরও পরিচয় পাওয়া যায়।”

সম্মেলনের উদ্বোধনীতে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার উত্থান ঘটছে। জঙ্গিবাদ-মৌলবাদ গোটা বাংলাদেশকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছে।

“আমাদের রাজনৈতিক দল এই সাম্প্রদায়িক, ধর্মান্ধ শক্তির সাথে কখনো মেলবন্ধনে, কখনো পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে, কখনো বা হাত ধরাধরি করে, প্রত্যক্ষে-প্ররোক্ষভাবে গোপন কারসাজি করে বাংলাদেশের ভোটের রাজনীতিকে তারা এগিয়ে নিতে চাইছে।”

মহিলা ঐক্য পরিষদের সভাপতি জয়ন্তী রায়ের সভাপতিত্বে সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে পরিষদের সাবেক সভাপতি সাবিত্রী ভট্টাচার্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মঞ্জু ধর বক্তব্য দেন।

সম্মেলন শেষে সুপ্রিয়া ভট্টাচায্য, মধুরিমা বড়ুয়া ও সিসিলিয়া গোমেজকে সভাপতির যৌথ দায়িত্ব ও দিপালী চক্রবর্তিকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট মহিলা ঐক্য পরিষদের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।