খালেদাই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী: মওদুদ

বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘মিথ্যা’ মামলা দিয়ে হেনস্তার চেষ্টা হলেও তাতে খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তাই ‘বাড়বে’ এবং তিনিই হবেন বাংলাদেশে ‘পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী’।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2018, 11:58 AM
Updated : 16 Jan 2018, 12:06 PM

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের শেষ দিনে আদালতে এ কথা বলেন তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ।

ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতে মঙ্গলবার এই শুনানিতে মওদুদ দাবি করেন, বিগত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুদক এই মামলা করেছিল ‘আইনের অপব্যাবহার করে’। এ মামলা শুরুতেই খারিজ করে দেওয়া উচিত ছিল।

মামলার বিচারের শেষ পর্যায়ে এসে এই যুক্তিতর্কে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ‘নিঃশর্ত ও সম্মানজনক খালাস’ চেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সংশ্লিষ্ট ছিলেন- ১৯৬৪ সালের এমন একটি মামলার উদাহরণ টেনে মওদুদ শুনানিতে বলেন, “সেই সিদ্ধান্তটি ছিল- বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া। ওই মামলার ঘটনার মত এই মামলার কারণেও খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা বাড়বে এবং তিনিই হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।”

খালেদা জিয়ার ২০০১-২০০৬ মেয়াদের সরকারে মওদুদ ছিলেন আইনমন্ত্রী। ওই সরকারের মেয়াদ শেষে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সে সময় খালেদা জিয়ার মত মওদুদকেও দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছিল।

সে সময় কারাগারে থাকা অবস্থায় সেনা কর্মকর্তাদের আলাপের বরাত দিয়ে মওদদু আদালতে বলেন, “আমি তখন জেলে ছিলাম। ক্ষমতা দখল করতে হলে কী করা যায়, সে বিষয়ে তারা কথা বলেছিল। প্রথমে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা তারা নিয়েছিল। পরে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ১৩টি এবং আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করে। এই মামলা তার একটি।”

এই আইনজীবী দাবি করেন, সে সময় আইনের অপব্যবহার করে দুদক এই মামলা করেছিল। শুনানিতে দুদক কোনো ধরনের তথ্যপ্রমাণও হাজির করতে পারেনি।

তিনি বলেন, “এই মামলার ঘটনার সঙ্গে আমাদের যদি কোনো অনিয়মও থাকে, তাহলেও এ মামলা হয় না, কারণ আমাদের কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না।”

এ বক্তব্যের ব্যাখ্যায় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় থেকেও বিভিন্ন অংশ আদালতে পড়ে শোনান বিএনপি নেতা মওদুদ।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় এই মামলা করে দুদক। তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ অগাস্ট তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

পাঁচ বছর পর ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ অভিযোগ গঠন করে খালেদাসহ ছয় আসামির বিচার শুরু করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান, মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।

খালেদা জিয়া এ মামলায় জামিনে আছেন। তারেক রহমান গত নয় বছর ধরে দেশের বাইরে, তার বিরুদ্ধে এ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ রয়েছেন কারাগারে।