তাবিথ আশাবাদী, সিদ্ধান্ত রাতে 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থী কে হবেন, সেই সিদ্ধান্ত সোমবার রাতে চূড়ান্ত করবে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Jan 2018, 10:55 AM
Updated : 15 Jan 2018, 01:10 PM

গত বারের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল এবারও দলের মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন; তিনি মনোনয়ন পাওয়ার আশাও প্রকাশ করছেন।

এছাড়াও প্রার্থী হতে আগ্রহী বিএনপির বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, সহ প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক শাকিল ওয়াহেদ, সাবেক সংসদ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামান রঞ্জন।

ঢাকা উত্তরের সভাপতি এম এ কাইয়ুমের পক্ষেও মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়া হয়েছে। ইতালীয় নাগরিক চেজারে তাভেল্লা হত্যা মামলার পলাতক আসামি কাইয়ুম বিদেশে আছেন। তার পক্ষে মনোনয়ন ফরম জমা দেন উত্তরের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, সাধারণ সম্পাদক আহসানুল্লাহ হাসান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ জি এম শামসুল হক।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, রাতে গুলশানের কার্যালয়ে দলের মনোনয়ন বোর্ড মেয়র পদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক ৫ জনের সাক্ষাৎকার নেবে। এর মধ্য দিয়ে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে মনোনয়ন বোর্ডের এই বৈঠক হবে। মনোনয়ন বোর্ড দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা রয়েছেন।

পদাধিকারবলে ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকও বৈঠকে থাকবেন বলে জানান রিজভী।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিখ সকাল সাড়ে ১০টায় নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভীর কাছে তার মনোনয়ন ফরম জমা দেন। সেই সঙ্গে জামানত হিসেবে জমা দেন ২৫ হাজার টাকা।

২০১৫ সালে ঢাকা উত্তরের নির্বাচনে বিএনপির সমর্থন নিয়ে মেয়র প্রার্থী হন রাজনীতিতে নবিশ তাবিথ। ভোটগ্রহণের মাঝপথে তিনি অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও ৩ লাখের বেশি ভোট পান।

ওই নির্বাচনে তাবিথের চেয়ে ১ লাখ ৩৫ হাজার ভোট বেশি পেয়ে মেয়র হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আনিসুল হক। তার মৃত্যুতে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি মেয়র পদে উপ-নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ১৮ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন।

বিএনপির বেশ কয়েকজনের আগ্রহের পাশাপাশি তাদের জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মুহাম্মদ সেলিমউদ্দিনও প্রার্থী হতে প্রচার চালাচ্ছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহও করেছেন তিনি।

আগ্রহী প্রার্থীদের প্রতিক্রিয়া

মনোনয়ন ফরম জমা দিয়ে তাবিথ সাংবাদিকদের বলেন, “এখন আমি অপেক্ষায় আছি রাতে মনোনয়ন বোর্ড আমাদের সাক্ষাৎকার নিয়ে মনোনয়ন চূড়ান্ত করবে। আমি আশাবাদী, বিএনপি আমাকে মনোনয়ন দেবে।”

কেন আশাবাদী- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘একই নির্বাচনে কিছু বছর আগে আমাকে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট সমর্থন দিয়েছিলো। যেই সমর্থন পাওয়ার মাঝে আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছিলাম ও বিশেষ জনমত তৈরি করতে পেরেছিলাম।

“সেই নির্বাচনটা কারোরই প্রত্যাশা মতো হয়নি। আমি মনে করি যে অভিজ্ঞতা ছিল, যে জনমত তৈরি ইতোমধ্যে করতে পেরেছি। যেই জনগণ ভোট দিলেও ভোটের অধিকার গণনার মাঝে হারিয়ে গিয়েছিল, তারা আবারো আশাবাদী যে, আমাকে ভোট দিয়ে জয়লাভ করতে যাবে।”

ছাত্রদলের সাবেক নেতা আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “সামগ্রিকভাবে এক পরিবর্তন করাই হচ্ছে আমার প্রত্যাশা। মনোনয়নের বিষয়ে নিসন্দেহে বিবেচনা করার মালিক পার্টি। আমাদের পার্টি গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতায় বিশ্বাস করে। আমি ফরমে আমার সব কিছু লেখেছি, আশা করি দল বিবেচনা করবে।

আসাদুজ্জামান রিপন গতবছর ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন, এবার উত্তরে প্রার্থী হতে চান

“আমরা যারা প্রার্থিতার জন্য আবেদন করেছি, তারা সবাই যোগ্য। আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। আমাদের দল সব কিছু বিবেচনা করে এটা চূড়ান্ত করবে।”

শাকিল ওয়াহেদ বলেন, “আমরা সবাই যোগ্য। এখন দেখার বিষয় সব কিছু বিবেচনা করে আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব একজনকে বাছাই করবেন- এই আস্থা আমার রয়েছে।”

আখতারুজ্জামান বলেন, “মনোনয়ন বোর্ড যে সিদ্ধান্ত দেবেন, আমি তা মাথা পেতে নেব।”

ফের সেনা মোতায়েনের দাবি

ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচন ভয়ভীতিমুক্ত করতে সেনা মোতায়েনের দাবি আবার জানিয়েছেন রিজভী।

তিনি বলেন, “সশস্ত্র ক্যাডাররা যাতে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে না নিতে পারে, সেজন্য সেনা মোতায়েন করতে হবে। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমি আবারও দাবি জানাচ্ছি, ভীতি-সংশয় দূর করে ভোটাররা যাতে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে, সেই নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।”

উত্তর সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরক্ষণেই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচনের সাত দিন আগে সেনা মোতায়েনের দাবি জানান।