বিএনপির মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন রিপন, তাবিথসহ পাঁচজন

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থী হতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুজ্জামান রিপন, তাবিথ আউয়ালসহ পাঁচজন বিএনপির মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Jan 2018, 10:05 AM
Updated : 14 Jan 2018, 10:53 AM

রোববার বেলা ১১টা থেকে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়। এবার বিএনপির ফরমের দাম রাখা হয়েছে ১০ হাজার টাকা।

বিকাল ৩টা পর্যন্ত বিএনপির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সহ প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক শাকিল ওয়াহেদ, গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, সাবেক সাংসদ অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামান (রঞ্জন) এবং বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এম এ কাইয়ুম এই ফরম সংগ্রহ করেন।

বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছ থেকে এই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা যাবে।

দিনের শুরুতে বেলা সোয়া ১১টায় প্রথম ফরমটি কেনেন শাকিল ওয়াহেদ। পরে পরে আখতারুজ্জামান এসে ফরম নেন।

ইতালীয় নাগরিক চেজারে তাভেল্লা হত্যা মামলার আসামি কাইয়ুমের পক্ষে মনোনয়নপত্র কেনেন উত্তরের সিনিয়র সহসভাপতি মুন্সী বজলুল বাসিত আনজু ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ জি এম শামসুল হক।

এছাড়া আসাদুজ্জামান রিপন নিজে এসে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

রুহুল কবির রিজভী জানান, ফরম বিক্রি রোববারই শেষ। সোমবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত নয়া পল্টনের কার্যালয়ে ২৫ হাজার টাকা জামানতসহ মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়া যাবে।

এরপর সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার হবে।  বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে গঠিত মনোনয়ন বোর্ড এই সাক্ষাৎকার নেবে।

রিজভী বলেন, “মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই করে একজন প্রার্থীকে মেয়র পদে মনোনয়ন দেবে। তার নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। আমরা আশা করছি, সোমবার মনোনয়ন বোর্ডের সাক্ষাৎকারের পরই সেই নাম জানা যাবে।”

দুপুরে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে তাবিথ আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, “আমি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মনোনয়ন ফরম কিনেছি। আমি আশাবাদী, বিএনপির মনোনয়ন আমি পাব, কারণ এই নির্বাচনের প্রথম পর্বে আমাকে সমর্থন দেওয়া হয়েছিল। সে সময় আমার নির্বাচনী কর্মকাণ্ড দেখে দল সন্তুষ্ট ছিল।  এবারও আমি আশাবাদী।”

মনোনয়ন না পেলে কী করবেন- এমন প্রশ্নে আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ বলেন, “দল যাকে প্রার্থী করবে শুধু আমি একা নয়, আমরা সবাই মিলিতভাবে এই নির্বাচনে ওই প্রার্থীর জন্য কাজ করব।”

আসাদুজ্জামান রিপন গতবছর ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন

আসাদুজ্জামান রিপন ২০১৫ সালের নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মনোনয়পত্র জমা দিলেও পরে মির্জা আব্বাসের জন্য সরে দাঁড়ান।  

এবার উত্তরের জন্য দলের মনোনয়ন ফরম নিতে এসে তিনি বলেন, “আমি অবিভক্ত ঢাকা নগর থাকতেই মেয়র পদে নির্বাচন করতে আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কাছে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলাম। ঢাকা বিভক্ত হওয়ার পরও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিতে বরাবরই আমার আগ্রহ ছিল। এবারও আমি দলীয় মনোনয়নের জন্য ফরম কিনেছি।”

বিএনপির এই বিশেষ সম্পাদক বলেন, “আমার লেখা-পড়া, আমরা অভিজ্ঞতা, আমার সাংগঠনিক পরিচয়, যোগ্যতা-সাহস-ত্যাগ সব কিছুই মিলে আমরা পার্টি বিবেচনা করবেন-এটাই আমরা দৃঢ় প্রত্যাশা।”

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান বলেন, তার বিশ্বাস, ২০১৮ হবে পরিবর্তনের বছর। আর সেই পরিবর্তন ‘আসবেই’।

“এই পরিবর্তন হবে জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষে। সেজন্য আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ফরম কিনেছি।”

শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন না পেলে কী করবেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “যিনি পাবেন আমি তার পক্ষে একশ ভাগ কাজ করব। ম্যাডামের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।”

শাকিল ওয়াহেদ বলেন, তিনি ঢাকা উত্তরকে ‘বিশ্বমানের নগরীতে’ পরিণত করতে চান। সে লক্ষ্যেই দলের মনোনয়ন চেয়েছেন।

“আমার যোগ্যতা, দলের প্রতি আমার দীর্ঘদিনের কমিটমেন্ট-অভিজ্ঞতা… ইত্যাদি বিবেচনায় আমরা ধারণা, আমার সম্ভাবনা ভালোই।”

পুলিশের খাতায় পলাতক  এম এ কাইয়ুম ওরফে কাইয়ুম কমিশনারের পক্ষে ফরম নিতে আসা বজলুল বাসিত বা শামসুল হক সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। নেতা-কর্মীদের সামনে তারা কেবল দুই আঙুল তুলে বিজয় চিহ্ন দেখান।

আনিসুল হকের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে উপনির্বাচনের জন্য আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন ঠিক করেছে নির্বাচন কমিশন।

এ উপনির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে আগামী ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। তা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ জানুয়ারি।