তফসিল ঘোষণার আগে থেকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন সেলিম; গত সোমবার জোটের বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরও তার তৎপরতায় ভাটা পড়েনি।
বৃহস্পতিবার যোগাযোগ করা হলে সেলিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য আমার দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। উত্তরা, বনানী, গুলশান, মোহাম্মদপুর, আদাবর, বাড্ডাসহ প্রভৃতি স্থানে আমি গণসংযোগ চালাচ্ছি। আমাদের নেতা-কর্মীরা কাজ করছেন।”
রোববার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র কিনবেন জানিয়ে তিনি বলেন, “উত্তর সিটির ভোটাররা মনে করেন, যোগ্যতম প্রার্থী হিসেবে জোটনেত্রী আমাকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবেন।”
জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি সেলিমের প্রচার নিয়ে নানা সন্দেহ দেখা দিয়েছে তাদের জোটের বড় দল বিএনপির কর্মীদের মধ্যে।
কেননা, কোনো সিটি করপোরেশনে মেয়র পদটি এখন পর্যন্ত জোটসঙ্গী অন্য কোনো দলকে ছাড়েনি বিএনপি; আর ঢাকার মতো গুরুত্বপূর্ণ নগরে মেয়র পদটি ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না বলে মনে করেন দলটির কর্মীরা।
তারা আরও বলছেন, তাছাড়া নিবন্ধন হারানো জামায়াত দলীয়ভিত্তিক এই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না, তাদের কেউ প্রার্থী হলে তাকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হবে, অথবা বিএনপির কাছ থেকে প্রতীক ধার করতে হবে।
হঠাৎ করে জামায়াতের প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দেওয়ায় নানা সন্দেহ ঘুরপাক খাচ্ছে বিএনপিকর্মীদের মধ্যে।
গত সোমবার খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে অংশ নেওয়া জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য আব্দুল হালিম জোটের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
ওই সভায় সিদ্ধান্তের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়া নাম চূড়ান্ত করার পর আগামী শনিবার তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা হতে পারে।
জোটগতভাবে বিএনপির কেউই প্রার্থী হচ্ছেন ইঙ্গিত দিয়ে ফখরুল বলেছেন, জামায়াতও বিষয়টি মেনে নেবে বলে তিনি আশাবাদী।
জোটের মনোনয়ন না পেলে শেষ পর্যন্ত প্রার্থী থাকবেন কি না প্রশ্ন করা হলে সেলিম বলেন, “জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী ইনশাআল্লাহ আমিই মনোনয়ন পাব। তবে এক্ষেত্রে দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।”
বৃহস্পতিবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়েও দেখা গেছে সেলিমের আইনজীবীসহ কয়েকজনকে। মনোনয়নপত্র না কিনলেও ভোটার তালিকার সিডি নিয়েছেন তারা।
এদিকে মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতাদের আগামী শনিবার বৈঠকে ডেকেছেন খালেদা জিয়া।
এই উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে আগামী ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। তা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ জানুয়ারি। ভোট হবে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি।
২০ দলীয় জোটের আরেক শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান নেতৃত্বাধীন অংশটিও মেয়র পদে প্রার্থী দিতে চাইছে।
ইরান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তার দলের মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম ইউসুফ আলী রোববার মনোনয়নপত্র কিনবেন।
ঢাকা উত্তরে তিন বছর আগে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপির সমর্থন নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন দলের নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়াল। এবারও তার সম্ভাবনা জোরাল বলে দলটির নেতারা মনে করেছেন।
এছাড়া দলের সহ-প্রকাশনা সম্পাদক শাকিল ওয়াহেদও আগ্রহী। শাকিলের ছবি সম্বলিত পোস্টারও লেগেছে বিভিন্ন স্থানে।
সা্বেক সংসদ সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. আখতারুজ্জামান রঞ্জন মেয়র পদে ভোট করতে আগ্রহী।
আখতারুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নেত্রীর কাছে আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছি।”