ওয়ান-ইলেভেন থেকে শিক্ষা নিয়েছে আ. লীগ: কাদের

আওয়ামী লীগ ‘ওয়ান-ইলেভেন’ থেকে শিক্ষা নিলেও বিএনপি তা নেয়নি মন্তব্য করে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এজন্য বিএনপির কারণে ফের ওয়ান-ইলেভেনের আশঙ্কা রয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Jan 2018, 10:16 AM
Updated : 11 Jan 2018, 10:28 AM

তবে আশঙ্কা থাকলেও বাংলাদেশে আর কোনোদিন ওয়ান-ইলেভেনের মতো ঘটানার পুনরাবৃত্তি করা যাবে না বলে মনে করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা বলেন তিনি।

‘আরেকটি ওয়ান-ইলেভেন হওয়ার আশঙ্কা আছে কিনা’- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘ভয়-আশঙ্কা আছে... এই কারণে যে- ওয়ান ইলেভেন থেকে আমরা শিক্ষা নিয়েছি, কিন্তু বিএনপি নেয়নি। বিএনপি তার বর্তমান অবস্থা জেনে গেছে। নির্বাচনের আগেই সারা দেশে আওয়ামী লীগের জোয়ার দেখে বুঝে গেছে যে- আগামী নির্বাচনে তাদের পরিণতি কী।

“ভোট পাওয়ার মতো কোনো কাজ করেনি। সে কারণে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করবে বিএনপি। আওয়ামী লীগ বিএনপির সেই দূরভিসন্ধিতা বাস্তবায়ন করতে দেবে না। বাংলাদেশে আর ওয়ান-ইলেভেনের পুনরাবৃত্তি ঘটানো যাবে না।”

নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়ে বিতর্কের জেরে রাজনৈতিক সংঘাতের মধ্যে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি ফখরুউদ্দিন আহমেদ নেতৃত্বাধীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা নেয়, রাজনীতিতে যা ওয়ান-ইলেভেন হিসেবে পরিচিত।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদায় নেওয়ার আগে সেই সরকারের দুই বছরে দুর্নীতির অভিযোগে বিএনপি-আওয়ামী লীগের বহু রাজনীতিবিদকে কারাগারে যেতে হয়।

আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকেও সেই সময়ে কারাগারে যেতে হয়েছিল। সেনা সমর্থিত সেই সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে- এমন একটি ভিডিও ইন্টারনেটে পাওয়া যায়।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়নে আগামী ১৬ জানুয়ারি মনোনয়ন বোর্ডের সভা রয়েছে জানিয়ে কাদের বলেন, সেখানেই প্রার্থীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, “প্রার্থী ঘোষণার আগে কেউ প্রার্থী নন। অনেকে নিজের মতো করে দলের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন, করছেন। এতে প্রমাণিত হয় না যে, প্রার্থী নির্বাচন হয়ে গেছে। তবে আতিকুল ইসলাম দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন। সে সময় শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কাজ কর। সিদ্ধান্ত পরে’।”

এর আগে সিটি করেপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগে রাজনীতিকের পরিবর্তে একজন ব্যবসায়ীকে নির্বাচিত করা হয়েছিল। এবারও যারা আলোচনায় রয়েছেন তারা ব্যবসায়ী। এ কারণে অনেকে বলছেন, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্রমশ ব্যবসায়ীদের দিকে ঝুঁকছে।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে দলটির সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, “দলের প্রার্থী, দলীয় নেতা আর নির্বাচন এটার মধ্যে পার্থক্য আছে। এটা রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজি। স্ট্র্যাটেজিক অ্যালায়েন্স। নির্বাচনে স্ট্র্যাটেজিক অ্যালায়েন্স হয়।

“আর একজন রাজনীতিবিদ কী ব্যবসা করতে পারেন না? তারা চাঁদাবাজি করে খাবেন?”

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক; সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল; দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার এবং উপ প্রচার আমিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।