ঢাকা উত্তরের ভোটে সেনা চায় বিএনপি

সাম্প্রতিক স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে সেনা মোতায়েন করা না হলেও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে উপ-নির্বাচনে তা চাইছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Jan 2018, 11:37 AM
Updated : 10 Jan 2018, 09:13 AM

এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর মঙ্গলবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকেদর বলেন, “আমরা অবশ্যই চাইব যে, এখানে যেন সেনাবাহিনী নিয়োগ করা হয়। নির্বাচনের সাত দিন আগে থেকে আমরা সেনাবাহিনী মোতায়েন চাই।”

বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নির্বাচনে বিএনপি সেনা মোতায়েনের দাবি জানালেও নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের বাইরে আর কোনো নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে টেনে আনার পক্ষপাতি নয়। ফলে বিএনপির দাবি উপেক্ষিত হচ্ছে।

আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণের দিন রেখে মঙ্গলবার ঢাকা উত্তর সিটিতে মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, তারা সব দলের জন্য সমান সুযোগের ব্যবস্থা নেবেন।

গত নির্বাচনে ভোটগ্রহণের মাঝপথে বর্জনের ঘোষণা দেওয়া বিএনপি এবারও অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ফখরুল বলেন, “মেয়র পদে নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করব। আমাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে জাতীয় স্থায়ী কমিটি সভায়। এই সভা আশা করছি, আগামী শনিবার অনুষ্ঠিত হবে।”

সোমবার ২০ দলের এক সভায় জোটগতভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়। প্রার্থী ঠিক করার দায়িত্ব দেওয়া হয় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে।

জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যে তাদের নেতা সেলিম উদ্দিনকে প্রার্থী ঘোষণা করে প্রচারে নেমেছিল।

ফখরুল বলেন, “২০ দলীয় জোট নেতৃবৃন্দ জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপর দায়িত্ব দিয়েছেন, তিনি যে মনোনয়ন দেবেন, সেই মনোনয়নকে সমর্থন করবেন। আমার ধারণা, এ নিয়ে (জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ঘোষণা) কোনো সমস্যা হবে না।”

ঢাকা উত্তরে গত নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী করেছিল তাবিথ আউয়ালকে। সেবার জয়ী হন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হক।

তার মৃত্যুতে উপ-নির্বাচন হচ্ছে। আগের বার নির্দলীয়ভাবে হলেও আইন সংশোধনের পর এবার দলীয় প্রতীক নিয়েই লড়বেন মেয়র প্রার্থীরা।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা কেমন- প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এক্ষেত্রে তারা আগের অবস্থানেই রয়েছেন।

“এই ইসি যে পদ্ধতিতে গঠন করা হয়েছে, সেই পদ্ধতি সঠিক ছিল না। সেখানে দল নিরপেক্ষ ব্যক্তিরা কম এসেছেন এবং বিশেষ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার দল নিরপেক্ষ নন।”

তবে ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ইসি ব্যবস্থা নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন ফখরুল।

“আমরা আশা করি যে, ইসি চেষ্টা করবে একটা নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্যে, নির্বাচনের যে সমস্ত আইন আছে তা প্রয়োগ করবে এবং সম্পূর্ণ দল নিরপেক্ষ একটা নির্বাচন করার ব্যবস্থা করবে।”

নয়া পল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক কমিশনার মো. আব্দুল মজিদের জানাজা শেষে ঢাকা উত্তরের নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ফখরুল।

তার সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের ‍উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।

জানাজায় উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কাজী আবুল বাশার, মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, রাজীব আহসানসহ মহানগরের নেতা-কর্মীরা। পরে দলের পক্ষ থেকে মজিদের কফিনে ফুল দেন ফখরুল।

রোববার রাতে মারা যান আব্দুল মজিদ। তার বয়স হয়েছিলো ৭০ বছর। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।