‘উপযুক্ত সময়ের’ অপেক্ষায় বিএনপি

বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বলেছেন, একাদশ নির্বাচন ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের’ অধীনে অনুষ্ঠানের দাবিতে ‘উপযুক্ত সময়ে’ আন্দোলনের কর্মসূচি দেবে তার দল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Jan 2018, 12:11 PM
Updated : 5 Jan 2018, 01:19 PM

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চতুর্থ বর্ষপূর্তির দিনে ঢাকায় এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদের এ বক্তব্য আসে।

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সমঝোতার পথে যাবে না। একমাত্র বিকল্প হলো রাজপথ। গণআন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে বাধ্য করতে হবে একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য।”

বিএনপি ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয় দফায় সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগ আরও চার বছর পার করে দিয়েছে রাজনীতিতে বড় কোনো চ্যালেঞ্জ ছাড়াই। 

সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি এখন ‘তত্ত্বাবধায়ক’ শব্দটি না বললেও একইরকম নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের’ অধীনে আগামী নির্বাচন করার দাবি জানিয়ে আসছে।

ওই দাবি আদায়ে আন্দোলনে নামার কথাও বিএনপি নেতারা বলে আসছেন, যদিও সাম্প্রতিক সময়ে রাজপথে তাদের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রকাশ্যে হাসি-ঠাট্টা করে আসছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা।

শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘৫ জানুয়ারি কলঙ্কিত নির্বাচন এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মওদুদ বলেন, “আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, সময় যখন আসবে, তখন আমরা কর্মসূচি দেব। সেজন্য আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে। একটা উপযুক্ত সময়ে, উপযোগী সময়ে আন্দোলনের সেই কর্মসূচি দেওয়া হবে। সেই কর্মসূচি সফল না হওয়া পর্য়ন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাব না।”

নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলনকে ‘গণআন্দোলনের রূপ’ দিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান মওদুদ।

“আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ২০১৪ সাল আর ২০১৮ সাল এক নয়। এবার আমরা নির্বাচন করব, নির্বাচনের সমস্ত প্রস্তুতি আমরা নেব। তবে সেই নির্বাচন হতে হবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন। কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়।”

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মত ‘ভোটবিহীন’ নির্বাচন বাংলাদেশের মাটিতে আর ‘হতে দেওয়া হবে না’ বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি নেতা মওদুদ। 

নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের এই আলোচনা সভায় অধঃস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি নিয়েও কথা বলেন সাবেক এই আইনমন্ত্রী।

তার অভিযোগ, সম্প্রতি শৃঙ্খলাবিধির যে গেজেট সরকার জারি করেছে, তা তৈরি করা হয়েছে এমনভাবে, যাতে নিম্ন আদালতকে ‘আরও কঠিনভাবে’ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ বলেন, “বিচারপতি এসকে সিনহার (পদত্যাগী প্রধান বিচারপতি) ঘটনার মাধ্যমে সরকার নিজেই বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। সরকার এটা সম্পূর্ণভাবে হরণ করে নিয়েছে। এখন তারা নিম্ন আদালতের বিচারকদের জন্য একটা শৃঙ্খলাবিধির গেজেট করেছে।

“এই গেজেটের মাধ্যমে নিম্ন আদালতকে এখন আরও কঠিনভাবে নির্বাহী বিভাগের অধীনে, প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই গেজেট মাসদার হোসেনের রায়ের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে। ওই রায়ের মূল বিষয় ছিলে বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথকীকরণ করা হবে।”

নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উপদেষ্টা ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে, জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় এ আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, এম এ হান্নান, শাজাহান সম্রাট, মিয়া মো. আনোয়ার বক্তব্য দেন।