৫ জানুয়ারি ঢাকায় কর্মসূচি নেই বিএনপির

দশম সংসদ নির্বাচনের বছর পূর্তির দিন সমাবেশ করতে চাইলেও অনুমতি না পাওয়ায় ঢাকায় কোনো কর্মসূচি রাখছে না বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Jan 2018, 12:59 PM
Updated : 4 Jan 2018, 01:31 PM

তবে ঢাকার বাইরে মহানগর, জেলা ও উপজেলা সদরে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবসের’ কালো পতাকা মিছিল হবে বলে বৃহস্পতিবার দলটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে না হওয়ায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। এরপর থেকে দিনটি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে।

এবার ৫ জানুয়ারি শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চেয়েছিল বিএনপি; কিন্তু অন্য একটি দলকে অনুমতি দেওয়ার কথা শুনে বিএনপিকে নিরাশ হতে হয়।

এরপর বিকল্প হিসেবে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চেয়ে পুলিশের অনুমতি চায় তারা।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া ও প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে যান।

সেখান থেকে বেরিয়ে এ্যানি সাংবাদিকদের বলেন, “ডিএমপি জনসভা করার অনুমতি দেয়নি। আমাদেরকে তারা অনুরোধ জানিয়েছে শুক্রবার সমাবেশ না করার।”

এই পরিস্থিতিতে দলের সিদ্ধান্ত জানাতে শুক্রবার সকাল ১১টায় নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারিও একই ধরনের অবস্থা তৈরি হলে বিএনপি ঢাকাকে বাদ রেখে সারাদেশে কর্মসূচি পালন করে।

গতবারের মতো এবারও রাজধানী বাদে অন্যান্য স্থানে কালো পতাকা মিছিল হবে বলে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বলেন, সমাবেশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত রাতে গণমাধ্যমকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

এর আগে সকালে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে সরকার পরিস্থিতি সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

তিনি তখন বলেছিলেন, “শুক্রবার গণতন্ত্র হত্যা দিবসের কর্মসূচি বিএনপি পালন করতে বদ্ধপরিকর। ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণসহ অঙ্গ সংগঠনগুলো ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। আমি অবিলম্বে শুক্রবারের সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আবার আহ্বান জানাচ্ছি।”

২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারিতে বিএনপি সমাবেশ করেছিল নয়া পল্টনে (ফাইল ছবি)

বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আলোচনা সভায় ফখরুল বলেন, রাজধানীতে জনসমাবেশের অনুমতি নিয়ে সরকার ‘দ্বৈতনীতি’ অনুসরণ করছে।

“আমাদেরকে পুলিশ কর্তৃপক্ষ সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি, অথচ আওয়ামী লীগকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে জনসভা করবার অনুমতি দিয়েছে। তাহলে বুঝতেই পারছেন ….।”

৫ জানুয়ারিকে দেশের রাজনীতিতে ‘কলঙ্কিত অধ্যায়’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “ওই দিন সম্পূর্ণ নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়ে একটি ভোটারবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠান করে তারা (সরকার) একদলীয় ব্যবস্থা কায়েম করে।”

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, “সরকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে ওই স্থানে একটি নাম অজানা সংগঠনকে অনুমতি দিয়ে যে নাটক করেছে, সেটা গণতন্ত্রের সাথে, জনগণের সাথে মশকরা বলে আমরা মনে করি।”

সমাবেশের অনুমতি দেওয়া-না দেওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিষয়- আওয়ামী লীগের সাধারণ ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, “জনগণ জানে, সরকারের হুকুম ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এক পা ফেলে না।

“ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথায় এটা পরিষ্কার, সরকার বিরোধী দলগুলোকে নির্মমতার দ্বারা অবরুদ্ধ করে রাখতেই আপনাদের হুকুমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে।”