মন্ত্রী হলেন যারা

সরকারের মেয়াদের শেষ বছরে তিনজনকে মন্ত্রী এবং একজনকে প্রতিমন্ত্রী করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Jan 2018, 02:00 PM
Updated : 2 Jan 2018, 05:13 PM

নতুন মন্ত্রীদের মধ্যে একজন এসেছেন টেককোক্র্যাট কোটায়; তিনি মোস্তফা জব্বার। রাজনীতিতে এক সময় সংশ্লিষ্টতা থাকলেও এখন তার পরিচিতি তথ্য প্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তা হিসেবে।

নতুন বাকি দুই মন্ত্রীদের মধ্যে একজন এতদিন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, তিনি নারায়ন চন্দ্র চন্দ;  অন্যজন লক্ষ্মীপুরের প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম শাজহাজান কামাল।

প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন রাজবাড়ীর সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী।

মঙ্গলবার বঙ্গভবনে তারা রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে শপথ নেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ছিলেন।

নিয়োগ হলেও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের দপ্তর বণ্টন এদিন হয়নি। তা বুধবার হবে বলে জানিয়েছেন শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনাকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

মোস্তাফা জব্বার

বিজয় বাংলা কিবোর্ডের উদ্ভাবক মোস্তাফা জব্বার বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি।

১৯৪৯ সালের ১২ অগাস্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থানার চর চারতলা গ্রামে জন্ম নেওয়া জব্বার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে।

মোস্তাফা জব্বারের কর্মজীবন শুরু হয়েছিল সাংবাদিকতা দিয়ে। ১৯৭৩ সালে তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৮৭ সালে তিনি কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবসায় প্রবেশ করেন এবং পরের বছর ১৬ ডিসেম্বর তিনি প্রকাশ করেন বিজয় বাংলা কিবোর্ড ও সফটওয়্যার।

আনন্দ প্রিন্টার্স এবং আনন্দ মুদ্রায়ণের প্রতিষ্ঠাতা জব্বার কপিরাইট বোর্ড এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির সদস্য। এর আগে কয়েক দফা তিনি বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।

নারায়ন চন্দ্র

খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার উলা গ্রামে ১৯৪৫ সালের ১২ মার্চ জন্ম নেওয়া নারায়ন চন্দ্র তিন ছেলে ও এক মেয়ের জনক।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স এবং ১৯৬৭ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নেন।

মাস্টার্সের ফল প্রকাশের আগেই নারায়ন চন্দ্র ডুমুরিয়ার সাহস নোয়াকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০৫ সালের ১১ মার্চ চাকরী থেকে অবসর নেন নারায়ন।

১৯৬৭ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে ১৯৮৪ সালে ডুমুরিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন, ১৯৯৫ সালে হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

ডুমুরিয়া উপজেলার ভাণ্ডাররপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন ছয়বার।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাহউদ্দিন ইউসুফের মৃত্যুর পর ২০০০ সালের ২০ ডিসেম্বর উপ-নির্বাচনে ডুমুরিয়া-ফুলতলা আসনে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নারায়ন চন্দ্র। পরে ২০০৮ ও ২০১৪ সালে আরও দুই দফায় তিনি আওয়ামী লীগের টিকেটে সাংসদ নির্বাচিত হন।

শাহজাহান কামাল

এ কে এম শাহজাহান কামালের জন্ম ১৯৫০ সালে লক্ষ্মীপুরে সদরের লাহার কান্দি গ্রামে। নোয়াখালীর চৌমুহনী কলেজ থেকে ১৯৬৮ সালে তিনি ডিগ্রি পাশ করেন।

১৯৭২ থেকে ৮২ সাল পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৯৬ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান কামাল।

প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৯৭৩ সালে লক্ষ্মীপুর-৩ আসন থেকে তিনি প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে দ্বিতীয়বার সংসদে আসেন।

২০০৯-১৪ মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জনতা ব্যাংকের পরিচালকের দায়িত্বেও ছিলেন শাহজাহান কামাল। 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শাহজাহান কামাল ঠিকাদারি ব্যবসার যুক্ত। তার ভাই অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি।

কাজী কেরামত

রাজবাড়ীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রভাবশালী কাজী পরিবারের ছেলে কাজী কেরামত আলীর জন্ম ১৯৫৪ সালের ২২ এপ্রিল। তার বাবা কাজী হেদায়েত হোসেন ছিলেন গণপরিষদ সদস্য। 

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার তিন দিনের মাথায় ১৮ অগাস্ট কাজী হেদায়েত হোসেনও আততায়ীর গুলিতে নিহত হন।

১৯৯১ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর পরের বছরই উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে এমপি নির্বাচিত হন কাজী কেরামত আলী। এরপর আরও তিনবার তিনি রাজবাড়ী-১ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন।