বিএনপি নেতা মওদুদ বলেছেন, “প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। কারণ তিনি এর (শৃঙ্খলা বিধিমালা) বিরোধিতা করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ন রাখার চেষ্টা করেছিলেন। তার সঙ্গে এটাই ছিল সবচাইতে বড় বিবাদ।”
রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধির গেজেট সোমবার জারি করে সরকার।
এস কে সিনহা প্রধান বিচারপতি থাকাকালে এর বিরোধিতা করেছিলেন। নানা নাটকীয়তার পর তিনি পদত্যাগ করার পর এই গেজেট প্রকাশ হল।
সোমবার গেজেট প্রকাশের পর আনিসুল হক তাতে দেরির জন্য বিচারপতি সিনহাকে দায়ী করে বক্তব্য রেখেছিলেন।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তার বিপরীত বক্তব্য নিয়ে হাজির হন বিএনপি আমলের আইনমন্ত্রী মওদুদ।
তিনি বলেন, “তাকে (বিচারপতি সিনহা) জোর করে পদত্যাগ করিয়ে যে ডিজাইন, যে কৌশল, যে দুরভিসন্ধি তাদের সরকারের ছিল, তা হল বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেটাই তারা আজ করেছেন এই বিধিমালার মাধ্যমে। এসকে সিনহাকে বিতাড়িত করে সরকার নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করেছে।”
বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধিমালাকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে মওদুদ বলেন, “এর মাধ্যমে নিম্ন আদালতের বিচারকগণ সম্পূর্ণভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে গেল। এখন আর বলা যাবে না যে, বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক একটি প্রতিষ্ঠান। এই শৃঙ্খলা বিধির মাধ্যমে প্রশাসন থেকে বিচার বিভাগকে পৃথকীকরণের মৃত্যু ঘটেছে।”
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মওদুদ এর বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও সরকারকে দেন।
“বিচার বিভাগের যারা নিয়োজিত আছে, বিচারপতি-বিচারক এবং আইনজীবী সম্প্রদায়ই নয়, বাংলাদেশের সকল শ্রেণির মানুষ এই বিধিমালার বিরোধিতা করে। এই বিধিমালার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে আন্দোলন হবে।”
‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের আয়োজনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীর এই আলোচনা সভায় মওদুদ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রিয়তা আর নেই।
“আমরা আর ১২০ টাকায় পেঁয়াজ খাব না, আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দেব না- গ্রামে গ্রামে মহিলারা এই কথা বলছেন। এটাই হবে আগামী দিনে নির্বাচনের স্লোগান।”
সংগঠনের সহসভাপতি মো. ইবরাহিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান রুহুল আলম চৌধুরী, সহ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ফরিদা মনি শহীদুল্লাহ, নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, তাঁতি দলের আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের মিলন মেহেদি বক্তব্য রাখেন।