হরতাল নিয়ে বিএনপির নতুন উপলব্ধি

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে টানা তিন মাসের হরতাল-অবরোধে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নাশকতার জন্য যে বিএনপিকে দায়ী করা হয়, সেই দলটি বলছে, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে হরতাল ‘জনসম্পৃক্ত’ কর্মসূচি নয়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2017, 12:22 PM
Updated : 1 Feb 2020, 02:27 PM

খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বাম দলগুলোর হরতাল ডাকার পর শুক্রবার ঢাকার নয়াপল্টনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দলের এ অবস্থান তুলে ধরেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, “বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমরা অবশ্যই কর্মসূচি দেব। আমাদের একটা ধারণা আছে হরতাল দেওয়া মানে জনগণের সম্পৃক্ততা, এটা সব সময় সঠিক নয়।

“জনগণের সম্পৃক্ততা নিয়েই আমরা আমাদের পক্ষে যেটা সম্ভব হবে সেই কর্মসূচি দেব। আমরা জনগণের সঙ্গে আছি।”

তবে ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া এই দামবৃদ্ধির বিষয়ে কখন কর্মসূচি দেবেন তা বলেননি বিএনপির মহাসচিব।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী দল বিএনপি ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে টানা তিন মাস হরতাল-অবরোধ পালন করে। সহিংস ওই রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে বাসে আগুন দেওয়া ও পেট্রল বোমা ছোড়ার মধ্য দিয়ে দেড়শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল বলে সরকারের ভাষ্য।

হরতালের কার্যকারিতা আদৌ আছে কি না তা নিয়ে সরকারি মহলে এর মধ্যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

এরপরও রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদে বামদলগুলোর ডাকা একটিসহ একাধিক ইস্যুতে ডাকা হরতালে বিএনপির পক্ষ থেকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার গণশুনানি করে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গ্রাহকের পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ৩৫ পয়সা বা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।

এর প্রতিবাদে ৩০ নভেম্বর সারাদেশে আধা বেলা হরতাল ডেকেছে সিপিবি, বাসদ ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালের ১ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত আটবার বাড়ানোর হল বিদ্যুতের দাম। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিদ্যুতের দাম গড়ে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ বাড়িয়েছিল সরকার। তাতে মাসে ৭৫ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের খরচ বাড়ে ২০ টাকা; ৬০০ ইউনিটের বেশি ব্যবহারে খরচ বাড়ে কমপক্ষে ৩০ টাকা।

বিদ্যুতের দামবৃদ্ধির সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি শুধুমাত্র দুর্নীতিবাজদের ভর্তুকি দিতে জনগণের পকেট কাটার জন্য।

“বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনকে দুঃসহ করবে। এই মূল্য বাড়ানোর মধ্যে সব কিছুর দাম বাড়বে, আলুর দাম, চালের দাম, দ্রব্যাদির দাম বৃদ্ধি পাবে, বস্ত্রের দাম বাড়বে, পরিবহন ব্যয় বাড়বে- এটার একটা ভয়াবহ প্রভাব অর্থনীতিতে পড়বে।”

বায়তুল মোকাররমে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছোট ভাই সদ্য প্রয়াত আহমেদ কামালের জানাজায় যাওয়ার আগে সকালে নয়া পল্টনের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন মির্জা ফখরুল।