প্রধান বিচারপতি নিয়োগে বিলম্ব ‘দুরভিসন্ধিমূলক’: বিএনপি

নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগে বিলম্বকে ‘সরকারের দুরভিসন্ধিমূলক কৌশল’ অভিহিত করে অবিলম্বে ওই পদে নিয়োগের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2017, 03:06 PM
Updated : 19 Nov 2017, 03:06 PM

রোববার সন্ধ্যায় এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ দলের এই অবস্থানের কথা জানান।

তিনি বলেন, “প্রধান বিচারপতির পদ একদিনের জন্য শূন্য থাকার কোনো অবকাশ নাই সংবিধানে। আপনারা এই যে সময় অতিবাহিত করছেন, এই যে সময় নিচ্ছেন প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ব্যাপারে, যা অত্যন্ত দুরভিসন্ধিমূলক একটা কৌশল।”

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীনদের তোপের মুখে এক মাসের বেশি ছুটি নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর বিদেশে যান বিচারপতি সিনহা। সেই ছুটি শেষে গত ১১ নভেম্বর  তার পদত্যাগপত্র পাওয়ার কথা জানায় বঙ্গভবন।

এর তিনদিনের মাথায় গত ১৪ নভেম্বর বিচারপতি এসকে সিনহার পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গ্রহণ করেছেন বলে গণমাধ্যমকে জানান রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন।

পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রসঙ্গে বলেন, যেহেতু সংবিধানে কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি, তাই বিষয়টি রাষ্ট্রপতির ওপর নির্ভর করছে।

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, “আইনমন্ত্রী বলেছেন, কোনো সময়সীমা নাই। এটা ভুল, এটা ঠিক নয়। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রীর পদ একদিনের জন্য শূন্য থাকতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধান বিচারপতি- এসব পদে সময় ক্ষেপণের কোনো সুযোগ নাই।

“আজকে দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, প্রধান বিচারপতি এখন পর্যন্ত সরকার নিয়োগ করছে না। কেন করছেন না? এটা একটি অত্যন্ত গভীর দুরভিসন্ধিমূলক একটা ষড়যন্ত্র বলব না, একটা কৌশল সরকারের। নানাভাবে বিচারপতিদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে, চাপ বজায় রাখার জন্যই আজকে এসব তারা করছেন। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই।”

মওদুদ বলেন, “আমরা আশা করব, অবিলম্বে এই পদটি যেন পূরণ করে দেওয়া হয়। তাতে করে সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গনে যে শূন্যতা ও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে, তা দূর হয়ে যাবে, আবার সুপ্রিম কোর্ট তার অধিকার পালন করতে সক্ষম হবে।”

জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ঢাকাস্থ ঝিনাইদহ জাতীয়তাবাদী ছাত্র ফোরামের উদ্যোগে কারাবন্দি নেতা চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মশিউর রহমান, সাবেক সাংসদ আব্দুল ওহাবের মুক্তির দাবিতে এই সভা হয়।

সেনানিবাসের নাম প্রসঙ্গে

কোনো রাজনীতিবিদের নামে সেনানিবাসের নামকরণ হলে তা দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে না বলে মন্তব্য করেন মওদুদ আহমদ।

তিনি বলেন, “খবরের কাগজে দেখলাম পটুয়াখালীতে সেনানিবাস হবে, সেই সেনানিবাসের নাম হবে শেখ হাসিনা সেনানিবাস। এটা তো কল্পনাতীত ব্যাপার।

“কোনো রাজনীতিবিদের নামে যদি সেনানিবাস হয়, তখনই রাজনীতি চলে আসে। আমি দাবি জানাচ্ছি, বলতে চাই সরকারকে যে, সেনাবাহিনীকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখুন, তাদের সঙ্গে রাজনীতিকে সম্পৃক্ত করবেন না। কোনো ব্যক্তির নামে, কোনো রাজনীতিবিদের নামে সেনানিবাস করবেন না, এটা করলে দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে না।”

সংগঠনের সভাপতি তারিখ উজ জামান তারিখের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।