‘গুরুত্বপূর্ণ বার্তা’ নিয়ে সমাবেশে আসছেন খালেদা

প্রায় দেড় বছর পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশের মধ্য দিয়ে ঢাকায় কোনো জনসভায় বক্তৃতা দিতে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2017, 10:57 AM
Updated : 12 Nov 2017, 08:14 AM

নির্বাচনের আগের বছরে রোববারের এই সমাবেশে তিনি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সর্বশেষ গত বছরের ১ মে শ্রমিক সমাবেশে বক্তৃতা দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেটা ছিল শ্রমিক দলের কর্মসূচি। ঢাকায় বিএনপির প্রকাশ্য কর্মসূচিতে তার সর্বশেষ অংশগ্রহণ গত বছরের ৫ জানুয়ারি নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের জনসভায়।

৭ নভেম্বর ‘বিপ্লব ও জাতীয় সংহতি দিবস’ উপলক্ষে এই সমাবেশ ডাকা হলেও এতে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি যে গুরুত্ব পাচ্ছে, তা বিএনপি মহাসচিবের কথায় স্পষ্ট।

তিনি শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “শুধু জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনই এই গণসমাবেশের মূল লক্ষ্য নয়; সেই সঙ্গে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনবার জন্যে চলমান যে আন্দোলন, সেই আন্দোলনকে সুসংহত করবার ক্ষেত্রে, জনগণের কাছে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যে মেসেজ... বা তিনি যে বাণী দেবেন- সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে সমগ্র দেশের সচেতন মানুষ মনে করে।

“আমরা মনে করি, এই গণসমাবেশ থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কাছ থেকে জাতি যা পাবে, সেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ হবে।”

বিএনপির সমাবেশ মঞ্চে নেতারা (রোববার দুপুরের ছবি)

নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনকালীন সময়ে ‘সহায়ক সরকারের’ দাবি জানিয়ে আসছে। বিএনপি নেত্রী ‘যথাসময়ে’ সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবেন বলেও বলে আসছেন দলটির নেতারা।

মঞ্চের পেছনে লাগানো ব্যানারে লেখা আছে- ‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে জনসভা’।

ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে আবেদন করার ছয় দিন পর সমাবেশের ঠিক আগের দিন ২৩ শর্তে অনুমতি মিললেও প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন বলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানিয়েছেন।  

তিনি রোববার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বেলা ২টায় জনসভার কার্যক্রম শুরু হবে। সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এখন আমরা দেশনেত্রীর অপেক্ষায়। বিকাল ৩টার মধ্যে ম্যাডাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসে পৌঁছাবেন বলে আমরা আশা করছি।”

জনসভার জন্য উদ্যানে ৬০ ফুট লম্বা ও ৩০ ফুট প্রশস্ত মঞ্চ নির্মাণ করেছে বিএনপি। মঞ্চের চারপাশে বসানো হয়েছে সিসি টিভি ক্যামেরা। মঞ্চের সামনে ৩০ ফুট জায়গায় বেষ্টনি দেওয়া হয়েছে।

পুরো জনসভা সুশৃঙ্খল রাখতে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের দুই হাজারের বেশি নেতাকর্মীদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করা হয়েছে।

দুপুরের মধ্যে জনসভায় জড়ো হওয়া বিএনপি নেতা-কর্মীরা

মহাসচিব মির্জা ফখরুল এই জনসভার পুরো কার্যক্রম সমন্বয় করছেন। তাকে সহযোগিতা করছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশ-পাশের এলাকায় সাজানো হয়েছে নানা রঙের ব্যানার-ফেস্টুনে। এসব ডিজিটাল ব্যানারে দেখা যাচ্ছে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি।

সমাবেশে অনুমতি দিতে দেরি করার সমালোচনার জবাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির যে কারণ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দেখিয়েছিলেন, তারও প্রতিবাদ করছেন ফখরুল।

তার দাবি, বিএনপির এই ধরনের সমাবেশেই কখনোই বিশৃঙ্খলা ঘটেনি।

এই সমাবেশ করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ ২৩ শর্ত দিয়েছে বিএনপিকে।

এতে বলা হয়েছে, সমাবেশের কারণে সড়কে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা যাবে না, কর্মসূচি শেষ করতে হবে বিকাল ৫টার মধ্যে।