বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কী হবে হাতাহাতিতেই প্রমাণ: কাদের

গণমাধ্যমের সামনে বক্তব্য দেওয়া নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের হাতাহাতির ঘটনায় আইনের প্রতি দলটির শ্রদ্ধার অভাব দেখছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Oct 2017, 10:04 AM
Updated : 21 Oct 2017, 06:08 AM

পুরান ঢাকার বকশিবাজারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাস প্রাঙ্গণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার বিষয়ে বক্তব্য দেওয়া নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতিতে জড়ান বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর গুলশানের ইয়ুথ ক্লাব মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন অনুষ্ঠানে ওই ঘটনা ও দুর্নীতির দুই মামলায় বিএনপি নেত্রীর বার বার সময় নেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে একথা বলেন কাদের।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “বারে বারে আদালতে অনুপস্থিত থেকে, বারে বারে আদালতের কাছ থেকে সময় নিয়ে তিনি (খালোদা জিয়া) বিচার কাজকে বিলম্বিত করছেন, তিনি আদালতকে হেনস্তা করছেন। আমি বলব, তিনি বার বার সময় নিচ্ছেন, আদালতকে হেনস্তা করছেন।

“গতকাল উনার দলের আইনজীবীদের হাতাহাতি প্রমাণ করে আইনের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নেই। তারা ক্ষমতায় গেলে কী অবস্থা হবে সেটা আপনারা বুঝতে পারছেন।”

দেশের অনেক সংবাদ মাধ্যম আওয়ামী লীগের প্রতি সুবিচার করছে না বলেও অভিযোগ করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক।

কাদের বলেন, “আমাদের নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে আপনারা সংবর্ধনা জানিয়েছেন, সংবর্ধনায় আমাদের কোনো নেতাকর্মী কি রাস্তায় এসেছে? কেউ রাস্তায় এসেছে? তাদের (বিএনপির) যা উপস্থিতি, এর চেয়ে বেশি ছিল আমাদের মহিলা উপস্থিতি। তারপরও কেউ রাস্তা অবরোধ করে স্লোগান তুলে আমাদের নির্দেশ কেউ অমান্য করেন নি।

“অথচ ওইদিন বিএনপির নেতাকর্মীরা এমন এক অরাজকতা..., রাস্তা দখল করে মিছিল করেছে, বিশৃঙ্খলা করেছে, এরা ক্ষমতা পেলে কী করবে- এটা দেশের জনগণ গতকাল হারে হারে উপলব্ধি করেছে।”

বিএনপি চেয়ারপারসনের দেশে ফেরা নিয়ে বুধবার বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়কে অবস্থান নেওয়ায় যে জনদুর্ভোগ হয়েছে, সাংবাদিকরা তা যথাযথভাবে তুলে ধরেনি বলে ভাষ্য ওবায়দুল কাদেরের।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমাদের কিছু কিছু বিষয়... আজকে যদি এটা আওয়ামী লীগের হত, তাহলে বলত রাস্তায় সীমাহীন জনদুর্ভোগ; আওয়ামী লীগের বেলায় বড়বড় এ ধরনের রিপোর্ট করে, আর গতকাল দেখলাম সেটা তারা ভুলে গেছে। কারো কারো বেলায় জনদুর্ভোগকেও তারা গ্রাহ্য করেন না, আওয়ামী লীগ হলে বলে লীগ দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে।

“আওয়ামী লীগের বেলায় পান থেকে চুন খসলে বিশাল নিউজ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। আমি সংবাদিকতা করেছি, আমি কখনো মিডিয়াকে আক্রমণ করে কথা বলি না; শুধু বলব সুবিচার করবেন। আমাদের প্রশংসা লিখবেন, সমালোচনা করবেন- গঠনমূলক সমালোচনা, শুদ্ধ করে। পক্ষপাতিত্ব করা, এটা বোধহয় সঠিক নয়।”

আওয়ামী লীগ জনদুর্ভোগ তৈরি করেনি দাবি করে গণমাধ্যমের উদ্দেশে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমরা অনুরোধ করব যা সত্য তা বলুন, আমাদের বিরুদ্ধের বিষয় বলুন, আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু জনদুর্ভোগ আমরা করিনি, সে কথার কেউ প্রশংসা করেনি।

“জনদুর্ভোগ শেখ হাসিনার জনসভায় হয়নি? কিন্তু পরশুদিন জনদুর্ভোগ হলেও সেটা অনেকেই চেপে গেছেন। এটাতো সুবিচার নয়, এটাতো বস্তুনিষ্ট সাংবাদিকতা নয়, এটাতে আমার একটু কষ্ট লাগল সেজন্য বলেছি।”

নির্বাচন কমিশনের কাছে দেওয়া আওয়ামী লীগের প্রস্তাবে সেনাবাহিনী মোতায়নের বিরোধিতা তাদের ছিলনা বলে জানান কাদের।

তিনি বলেন, “আমরা কখনো বলিনি, আমরা সেনাবাহিনী মোতায়নের বিরুদ্ধ; আমরা বলেছি অ্যাক্ট অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার যদি মনে করে, তাহলে আইন অনুযায়ী সেনাবাহিনী মোতায়ন করবে। আমরা কখনো বলিনি যে সেনাবাহিনী মোতায়ন করা যাবে না।”

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমতউল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান বক্তব্য রাখেন।