ফালুর বিরুদ্ধে ৬টি মামলা করছে দুদক

জালিয়াতি করে বন বিভাগের জমি দখল করায় খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সাবেক সদস্য মোসাদ্দেক আলী ফালুর বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করেতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2017, 12:15 PM
Updated : 18 Oct 2017, 12:20 PM

বুধবার কমিশনের সভায় মামলাগুলো দায়েরের অনুমোদন দেওয়া হয় বলে দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বন বিভাগের প্রায় ১০ একর জমি দখলে ফালুকে সহায়তা করার অভিযোগে আরও ১৫ জনকে মামলাগুলোতে আসামি করা হচ্ছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের এক সময়কার সচিব ফালু পরে উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেয়েছিলেন। বর্তমান কমিটিতে তাকে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে সরিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান করা হলে তিনি পদত্যাগ করেন।  এরপর থেকে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় এনটিভি চেয়ারম্যান ফালু নিজের ব্যবসা নিয়েই রয়েছেন।

সাবেক সংসদ সদস্য ফালুর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলা রয়েছে। তার সঙ্গে এখন আরও ছয়টি যোগ হল।

প্রনব বলেন, “ময়মনসিংহের ভালুকা থানার পালগাঁও মৌজায় ছয়টি দলিলের মাধ্যমে ৯ দশমিক ৬৪ একর জমি মোসাদ্দেক আলী ফালুর নামে রেজিস্ট্রি করে আত্মসাত করা হয়। আত্মসাতের সহায়তা করার অভিযোগে বাকি ১৫ জনকে আসামি করা হচ্ছে।”

বাকি আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ভালুকা উপজেলার সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার মো. ফজলার রহমান, তিনি বর্তমানে ঢাকার কেরানীগঞ্জের সাব রেজিস্ট্রার। ফালু ও সাব রেজিস্ট্রারকে ছয়টি মামলাতেই আসামি করা হচ্ছে।

এছাড়া জমির দলিল লেখক মো. আকরাম হোসেন জুয়েল, জমির ‘ভুয়া’ মালিক মো. রুহুল আমিন, মো. খোকা মিয়া, মো. ফললুল হক ওরফে দরবেশ আলী, মো. হাতেম আলী, জহুরা খাতুন, মো. নূরুল ইসলাম, মো. আব্দুল লতিফ, চম্পা আক্তার, সুফিয়া খাতুন, ফাতেমা খাতুন, জুবেদা খাতুন, মাজেদা বেগম ও সাফ খাতুনকে আসামি করা হচ্ছে।

দুদকের ময়মনসিংহ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগগুলো অনুসন্ধান করেন।

মোসাদ্দেক আলী ফালু (ফাইল ছবি)

অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, “মোসাদ্দেক আলী ফালু ওই জমি বন বিভাগের সম্পত্তি জেনেও নিজে লাভবান হওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে রেজিস্ট্রি করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।”

দুদক জানায়, গত বছরের ৩ অক্টোবর ভালুকা উপজেলা ভূমি অফিস থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে সংরক্ষিত বনভূমি হিসাবে চূড়ান্তভাবে ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত গেজেটভুক্ত ওই জমি হন্তান্তর, নামজারি, জমা-খারিজ, রেকর্ড সংশোধন ইত্যাদি কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল।

একইসঙ্গে বন বিভাগের গেজেটভুক্ত জমি রেজিস্ট্রি করা হয়ে থাকলেও তা বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়কে বলা হয়।

ওই বিজ্ঞপ্তির পরও সাব রেজিস্ট্রার ফজলার রহমান আইন ও বিধি বিধান অনুসরণ না করে অবৈধ সুবিধা নিয়ে দালাল চক্রের যোগসাজশে ছয়টি দলিলে রেজিস্ট্রি করে সরকারি সম্পত্তি ফালুকে হস্তান্তর করা হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হচ্ছে।