তিন মাস পর ফিরছেন খালেদা

তিন মাস যুক্তরাজ্যে অবস্থানের পর দেশের পথে রওনা হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

এমন এক সময়ে তিনি ফিরছেন, যখন নাশকতা ও মানহানির তিন মামলায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ৯টায় ৪৫ মিনিটে হিথরো থেকে এমিরেটসের ফ্লাইটে দেশের পথে রওনা হয়েছেন তাদের চেয়ারপারসন।

দুবাইয়ে আড়াই ঘণ্টা যাত্রা বিরতি দিয়ে বুধবার বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে খালেদা জিয়ার। 

একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার ও  ব্যক্তিগত কর্মী ফাতিমা আখতার ফিরতি পথে খালেদা জিয়ার সঙ্গে রয়েছেন বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন। 

চিকিৎসার জন্য গত ১৫ জুলাই খালেদা জিয়া লন্ডনে যান, সেখানে ওঠেন বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায়। প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী-কন্যারাও এবার লন্ডনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেন।

গত ৮ সেপ্টেম্বর মুরফিল্ড হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চোখের অস্ত্রোপচার হয়। এছাড়া আর্থারাইটিসেরও চিকিৎসা নেন তিনি।

গত নয় বছর ধরে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক মঙ্গলবার রাতে তার পূর্ব লন্ডনের বাসা থেকে নিজেই গাড়ি চালিয়ে তার মাকে হিথরো বিমানবন্দরে পৌঁছে দেন। তারেকের স্ত্রী জোবাইদা রহমানসহ পরিবারের সদস্যরাও সেখানে ছিলেন।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি মালেক বলেন, তাদের নেত্রীকে বিদায় জানাতে দলের কয়েকশ নেতা-কর্মী হিথরোর বাইরে জড়ো হয়েছিলেন।

খালেদার ফেরা উপলক্ষে দলীয় কোনো কর্মসূচি না থাকলেও তাকে শুভেচ্ছা জানাতে বিমানবন্দর সড়কে অবস্থান নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে নেতা-কর্মীদের।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নাগরিক সংবর্ধনা জানানোর মত কেনো কেন্দ্রীয় কর্মসূচি আমরা রাখিনি।

“তবে ম্যাডাম বিদেশে গেলে অথবা দেশে ফিরলে নেতা-কর্মীরা তাকে বিদায় অথবা অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরের বাইরে অবস্থান করে। এটা সব সময় হয়ে থাকে।”

মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারাও বিকালে বিএনপি চেয়ারপারসনকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকবেন।

বিএনপির সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিকাল ৩টা থেকে তাদের নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে বিমানবন্দর থেকে বনানীর কাকলী পর্যন্ত সড়কের ফুটপাতে অবস্থান নেবেন তারা।

তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় খালেদা জিয়া ফেরার পরপরই কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে মঙ্গলবার সরাসরি উত্তর না দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “পরোয়ানা হাতে এলে এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আর সেই পরোয়ানা এখনও পুলিশের হাতে পৌঁছেনি বলে আইজিপি এ কে এম শহীদুল হককে উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।

বিএনপি নেতা ও সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ মনে করেন, খালেদাকে গ্রেপ্তারের মত ‘ভুল’ সরকার করবে না।

মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “ওয়ারেন্ট ইস্যুটা অনেকটা রাজনৈতিক প্রভাবে ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের জন্য হয়েছে বলে আমি মনে করি।

“অনেকে জিজ্ঞাসা করেছেন, ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে, তাহলে কী হবে এখন? আমি বলব, কিছুই হবে না। উনি (খালেদা) আসবেন এবং আদালতে হাজির হবেন।”

মওদুদ বলেন, খালেদা জিয়া দেশে এসে বৃহস্পতিবার আদালতে যাবেন। সেখানে তার জামিনের ফয়সালা হবে।