সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, “প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো একেবারে পাতালপুরী থেকে নিয়ে আসা রূপকথার গল্প ছাড়া অন্যকিছু না।
“জোর করে সন্ত্রাসী কায়দায় জালিয়াতির মাধ্যমে তাকে ছুটিতে পাঠিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য করার পর এখন চূড়ান্ত পদক্ষেপ পদত্যাগ করাতেই হঠাৎ এসব অভিযোগ তোলা হয়েছে বলে জনগণ বিশ্বাস করে”
তিনি বলেন, “এটা একেবারে সুস্পষ্ট যে, তাকে ঘায়েল করার জন্য তার বিবৃতি, তার বক্তব্য, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে তার পর্যবেক্ষণে সরকার নানাভাবে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছে বলেই এই বানোয়াট আক্রমণ শুরু করেছে একের পর এক।”
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
প্রধান বিচারপতি সিনহা ছুটি নিয়ে গত শুক্রবার বিদেশ যাওয়ার পরদিন সুপ্রিম কোর্টের এক বিবৃতিতে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, আর্থিক অনিয়ম ও নৈতিক স্খলনসহ সুনির্দিষ্ট ১১টি অভিযোগের কথা জানানো হয়।
সুপ্রিম কোর্টের বিবৃতিতে বলা হয় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গত ৩০ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের বিচারপতিদের ডেকে নিয়ে বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে ‘১১টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ’ তুলে ধরেন।
রিজভী বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে- প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারপতিকে ডেকে নিয়ে রাষ্ট্রপতি বৈঠক করেছেন এবং তাদের বুঝিয়েছেন। দেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞরাও বলছেন যে, এটা সংবিধানে নেই। প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে অন্য বিচারপতিদের নিয়ে বৈঠক করে রাষ্ট্রপতিও সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন।
“রাষ্ট্রপতির যদি প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে এত অভিযোগই থাকে তাহলে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করলেন না কেন- এই প্রশ্ন এখন আইন অঙ্গনে ঘুরপাক খাচ্ছে।”
প্রধান বিচারপতি ছুটিতে যাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলসহ ১০ কর্মকর্তাকে বদলির আদেশ সংক্রান্ত আইন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনকে ‘বেআইনি’ বলেন রিজভী।
তিনি বলেন, “এটা নজিরবিহীন ঘটনা। প্রধান বিচারপতি অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পূর্বে বলেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনের রদবদল শুধুমাত্র প্রধান বিচারপতির এখতিয়ার।
“তাহলে প্রধান বিচারপতির বক্তব্য অনুযায়ী আইন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনও বেআইনি। এটা আইন মন্ত্রণালয় করতে পারে না। কিন্তু তাদের (আইন মন্ত্রণালয়) তো এসব যায় আসে না। কারণ তারা বেপরোয়া জমিদারির রাজত্ব কায়েম করেছে, তারা এখন সংবিধান, আইন, বিচারিক প্রক্রিয়া- এসব থোড়াই কেয়ার করে।”
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের সময় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেন রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, কাজী আবুল বাশার, রফিকুল ইসলাম রাসেল, সাইফুল ইসলাম পটু প্রমুখ।