জিয়ার ‌‌গুণগান: সিইসির পদত্যাগ চান কাদের সিদ্দিকী

সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশে ‌‘বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠাতা’ বলায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার পদত্যাগ দাবি করেছে কাদের সিদ্দিকীর দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।

জেষ্ঠ্য প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2017, 09:11 AM
Updated : 16 Oct 2017, 12:09 PM

সোমবার ঢাকার নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে যোগ দেওয়ার পর আড়াই ঘণ্টার মাথায় ওই দাবিতে আলোচনা বর্জনের কথা জানিয়েছে দলটি।  

বেলা ২টার দিকে সংলাপ থেকে বেরিয়ে এসে কাদের সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, ‍“নির্বাচন কমিশনে আমাদের বক্তব্য অব্যাহত রাখতে পারি নাই। আমরা আলোচনা বয়কট করে চলে এসেছি।”

ইসির ধারাবাহিক সংলাপের ৩৪তম দল ছিল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসে প্রথমবারের মত এ ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হল নূরুল হুদার কমিশন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, “আমরা আলোচনা বয়কট করেছি এই জন্য যে, যদি জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে থাকে, তাহলে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে কেউ না কেউ হত্যা করেছে। তাহলে সেই হত্যা করা, বাতিল করা, স্থগিত করা বা নির্বাসনে দেওয়া গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে জিয়াউর রহমান। তার (সিইসি) এই বক্তব্যের সাথে আমরা একমত না।”

সিইসিকে একটি ‘নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে বর্ণনা করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, “সিইসি এ কথা বলতে পারেন না যে জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন আর শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন। তাই আমি মনে করি, সিইসির এই মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিত। তিনি অত্যন্ত কঠিন একটা বেহিসাবি কথা বলেছেন।”

আগের দিন বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসে দলটির নেতা সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের প্রশংসা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদা।

তিনি বলেন, ব্যক্তি হিসেবে এবং দলনেতা হিসেবে জিয়াউর রহমান চার বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন।

“তার হাত দিয়েই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠা লাভ করে।”

এরপর সূচি অনুযায়ী কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ২৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার সকালে সংলাপে যোগ দিতে ইসিতে আসে। সিইসি কে এম নূরুল হুদা, চার নির্বাচন কমিশনার, ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

পরে বেরিয়ে এসে কাদের সিদ্দিকী বলেন, পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনে সিইসি বাকি চারজনের সঙ্গে ‘আলোচনা না করে একাই’ জিয়াকে নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।

‍“দেশে যে লড়াই সে সেটি গণতন্ত্রের লড়াই। সে লড়াই মানুষের অধিকারের লড়াই। সেই জন্য আমাদেরকে ডাকা। এই আলোচনায় আমরা অংশগ্রহণ করলেও সেটাকে আমরা স্বীকার করতে পারছি না।”

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে আসন পুনর্বিন্যাস, ভোটের সময় সেনা মোতায়েন, ইভিএম চালুসহ ১৮ দফা সুপারিশ করেছে বলে জানান দলটির সভাপতি।

‘পরে বলবেন’ সিইসি

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সংলাপ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর বিকাল ৩টায় সাম্যবাদী দলের সঙ্গে বসে নির্বাচন কমিশন। সিইসি সম্মেলন কক্ষে প্রবেশের সময় সাংবাদিকরা কাদের সিদ্দিকীর বক্তব্যের বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চান ।

প্রথমে চুপ থাকলেও এক পর্যায়ে সিইসি বলেন, “এ বিষয়ে এখন কোনো কথা বলব না, পরে কথা বলব।”