জামায়াতের হরতালে ‘নেই’ বিএনপি 

দলের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতালে জোট শরিক বিএনপির সমর্থন মেলেনি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Oct 2017, 01:04 PM
Updated : 11 Oct 2017, 01:46 PM

হরতালের আগের দিন বুধবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “এই যে গ্রেপ্তার হয়েছেন (জামায়াত নেতারা), দলের পক্ষ থেকে তাদের মুক্তি দাবি করে স্টেটমেন্ট গেছে, মহাসচিব বিবৃতি দিয়েছেন। এই পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি। এর বাইরে আর কিছু নাই।”

তখন তার কাছে স্পষ্ট করে জানতে চাওয়া হয়, জামায়াতের হরতালে আপনাদের সমর্থন আছে কি নেই?

“এ ব্যাপারে এখনও আমার কাছে কোনো ‘ইয়ে’ আসেনি,” জবাবে বলেন রিজভী।

জামায়াতের আমির মকবুল আহমাদ, নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমানসহ আট নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সারা দেশে হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের এই নেতারা এখন রিমান্ডে আছেন।

পুলিশ বলছে, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারার লক্ষ্যে গোপন বৈঠক’ করার সময় সোমবার ঢাকার উত্তরার একটি বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে হরতালের ডাক দিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত আমির মুজিবুর রহমান মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, “দলের আমিরসহ নেতৃবৃন্দকে গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে সাজানো মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রত্যেককে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার প্রতিবাদে এবং তাদের মুক্তির দাবিতে আগামী ১২ অক্টোবর সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ সর্বাত্মক হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করছি।”

এছাড়া বুধবার সারা দেশে বিক্ষোভ এবং শুক্রবার দোয়া মাহফিলের কর্মসূচিও দিয়েছে দলটি।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত এবং ওই নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তিতে বিএনপির হরতাল-অবরোধে জামায়াতে ইসলামী সমর্থন দেয়। তবে যুদ্ধাপরাধে জামায়াত নেতাদের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকরের পর দলটির হরতালে সমর্থন থেকে বিরত থেকে বিএনপি।

বিএনপির বিক্ষোভ ঠেকাতে ‘পুলিশি হামলা’

নাশকতার মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে বুধবার তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন রুহুল কবির রিজভী।

বিকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বেপরোয়া হামলা ও লাঠিচার্জ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা।”

ঢাকা, চট্টগ্রাম রাজশাহী, নোয়াখালী, গাইবান্ধা, লক্ষীপুর, বরিশাল, নারায়ণগঞ্জ, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ বিএনপির মিছিলে ‘হামলা ও গুলিবর্ষণ’ এবং নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

“কোনো কোনো স্থানে নেতা-কর্মীদের বাড়ি-ঘর ঘেরাও করে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা সেখানে ভাংচুর চালায়।”

এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে গ্রেপ্তার নেতকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন রিজভী।

তিনি বলেন, “গতকাল থেকে এখন পর্যন্ত সারা দেশে ১৭0 জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার এবং পুলিশি হামলায় আড়াইশর বেশি নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।”

২০১৫ সালে বিএনপির টানা তিনমাসের হরতাল-অবরোধের মধ্যে কুমিল্লায় বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপে দগ্ধ হয়ে আটজনের মৃত্যু হয়। ওই মামলায় সোমবার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ আদালত।

সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল উপস্থিত ছিলেন।