এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনদের বিভিন্ন পদক্ষেপকে বিশ্বের তারকা ফুটবলার লিওনেল মেসির খেলার সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় ফখরুল বলেন, “ওরা জানে যদি নির্বাচন হয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষভাবে, আমাদের বাংলাদেশের সব মানুষ যদি ভোট দিতে যায় তাহলে কোনোমতেই রাষ্ট্রক্ষমতায় ফিরে আসতে পারবে না। পারবে না বলেই তারা সেই নির্বাচন সেইভাবে হতে দিতে চায় না। ক্যারিক্যাচার, কারুকার্য- ফুটবল খেলায় দেখেন তো আপনারা।
“সেখানে সেন্টার ফরোয়ার্ড সেই মেসির মতো, ড্রিবলিং করে বলকে কাটিয়ে কাটিয়ে নিয়ে যায়, এরা হচ্ছে সেই ড্রিবলিং করে করে বল নিয়ে খালি মাঠে গোল দিতে চাচ্ছে।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোট বর্জন করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।
বিএনপি এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি থেকে সরে এসে নির্বাচনকালীন ‘সহায়ক সরকার’ চাইছে। তবে ক্ষমতাসীনরা বলছেন, সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে।
শেখ হাসিনা সরকারপ্রধান থাকাকালে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না দাবি করে এ বিষয়ে সমঝোতার জন্য সংলাপে বসতে ইতোমধ্যে কয়েক দফা আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। কিন্তু তার আহ্বানে সাড়া দিচ্ছেন না আওয়ামী লীগ নেতারা।
এই প্রেক্ষাপটে বিষয়টি নিয়ে জনগণের কাছে যেতে নেতাকর্মীদের পরামর্শ দেন ফখরুল।
তিনি বলেন, “আমাদের দায়িত্বটা স্পষ্ট- রাজনৈতিক দল হিসেবে, রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে দেশপ্রেমিক হিসেবে, গণতন্ত্রকামী মানুষ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব জনগণকে সচেতন করা। এই যে ভয়াবহ একটা নীলনকশা, সেই নীলনকশাকে পরাজিত করে দিয়ে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করা, নির্বাচন নিশ্চিত করা।”
সরকারের ‘দমন-পীড়ন’ উপেক্ষা করে নেতাকর্মীদের আরও ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত নাজিরউদ্দিন জেহাদের ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে শহীদ জেহাদ পরিষদ।
ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও নাজিম উদ্দিন আলমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে সাবেক ছাত্রনেতা শামসুজ্জামান দুদু, হাবিবুর রহমান হাবিব, ফজলুল হক মিলন, আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবির খোকন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, খন্দকার লুৎফর রহমান, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, আসাদুর রহমান খান, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, কামরুজ্জামান রতন, আজিজুল বারী হেলাল, এবিএম মোশাররফ হোসেন, মীর সরফত আলী সপু বক্তব্য রাখেন।
যুব দলের সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, ছাত্র দলের রাজীব আহসান, প্রয়াত জেহাদের ভাই কেএম বশিরও বক্তব্য দেন।
সকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমাউল্লাহ আমান ও হাবিবুর রহমান হাবিবসহ নেতারা দৈনিক বাংলা মোড়ে শহীদ জেহাদ স্মৃতি স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।