প্রধান বিচারপতিকে দেশত্যাগে চাপ দেওয়া হচ্ছে: রিজভী

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে দেশ ছাড়তে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Oct 2017, 03:48 PM
Updated : 8 Oct 2017, 03:48 PM

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীনদের সমালোচনার মুখে থাকা প্রধান বিচারপতি গত সপ্তাহে ছুটিতে যাওয়ার পর সাংবাদিকদের যোগাযোগের বাইরে আছেন।

বিচারপতি সিনহা ও তার স্ত্রী সুষমা সিনহা তিন বছর মেয়াদী অস্ট্রেলিয়ার ভিসা পেয়েছেন এবং শিগগিরই তারা দেশ ছাড়ছেন বলে আদালতের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

এই প্রেক্ষাপটে রোববার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “সন্ত্রাসী কায়দায় প্রথম প্রধান বিচারপতিকে গৃহবন্দি করে রাখার পরে এখন নজরবন্দি করে রাখা হয়েছে। এখন প্রধান বিচারপতিকে দেশত্যাগে সার্বক্ষণিক তার ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।”

এক মাস অবকাশের পর গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট খোলার পর প্রধান বিচারপতির ছুটিতে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক প্রধান বিচারপতির ছুটির আবেদন সাংবাদিকদের দেখান।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (ফাইল ছবি)

ওই আবেদন ভুয়া দাবি করে রিজভী বলেন, “ছুটির দরখাস্তে প্রধান বিচারপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করেছে সরকারের এজেন্সিগুলো। নজিরবিহীন ঘটনা হচ্ছে তার দরখাস্তে ছয়টি শব্দের বানান ভুল। তার (প্রধান বিচারপতি) ওপর আক্রোশের নির্দেশদাতা স্বয়ং সরকার ও সরকার প্রধান।”

প্রধান বিচারপতির ছুটিতে যাওয়ার তথ্য প্রকাশের পর তার কাছ থেকে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বিএনপি সমর্থক সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নেতারা তার সঙ্গে দেখা করতে গেলেও বাসায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

এ প্রসঙ্গ তুলে বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, “শুধু তার সরকারের মন্ত্রী-উপদেষ্টা ও সরকারের এজেন্সিরা প্রধান বিচারপতির সাথে সাক্ষাৎ করে। এ থেকে বোঝা যায় তিনি স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না।”

সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের দলীয় প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন রিজভী।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ‘জনগণকে ধোঁকা দেয়ার শামিল’ বলছেন তিনি।

রিজভী বলেন, “দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের ভূমিকা কী ছিল? আন্তর্জাতিক ভূমিকার কারণেই তারা (সরকার) রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলতে বাধ্য হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সম্পূর্ণ অসত্য, প্রবঞ্চনামূলক, জনগণকে ধোঁকা দেয়ার শামিল।

“আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রী তার সফর থেকে শুন্য হাতে ফিরে এখন ‘লং টক’ করছেন, বড় বড় কথা বলছেন।”

বিএনপি প্রথম থেকে রোহিঙ্গাদের পক্ষে সোচ্চার থাকায় সরকার ‘রোহিঙ্গাবিরোধী’ তৎপরতা কমায় বলে দাবি করেন তিনি।

এছাড়া মিয়ানমারের দিক থেকে যুদ্ধের উসকানি ছিল বলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ধরে তিনি প্রশ্ন করেছেন, তাহলে বাংলাদেশ কেন সেখান থেকে চাল কিনতে গেল।

“ওরা যদি যুদ্ধের উসকানি দেয় আর আপনি তাদের কাছে নতজানু হয়ে চাল ভিক্ষা করবেন- এটা তো দেশের জাতির গৌরব, অহংকারের সাথে মিলে না, এই জাতির বীরত্বের সাথে মিলে না। আপনি অন্য দেশের প্রতি নতজানু বলে আপনার পক্ষে এটা করা সম্ভব।”

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, তৈমুর আলম খন্দকার, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল উপস্থিত ছিলেন।