শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “অতীতে ভারতের সাথে ঋণ চুক্তিতে কঠিন শর্ত আরোপ করায় প্রকল্পগুলো এখনো আলোর মুখ দেখেনি। ২০১৬ সালে চুক্তি হওয়া দ্বিতীয় ঋণের ২০০ কোটি ডলার এখনো ছাড় হয়নি। আর প্রথম ঋণের ১০০ কোটি ডলারের মধ্যে সাত বছরে ছাড় হয়েছে মাত্র ৩৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
“ভারতের সঙ্গে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে আবারো কঠিন শর্তে ঋণ চুক্তি করা হয়েছে তা দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়।”
গত ৪ সেপ্টেম্বর তৃতীয় লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় ভারতের সাথে সাড়ে ৪০০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের উপস্থিতিতে এই চুক্তি সই হয়।
বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক বিভাগের সচিব শফিকুল আযম ও ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক(এক্সিম) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডেভিড রাসকিনহা এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
প্রথম দুটি লাইন অব ক্রেডিটের মত এই ঋণের জন্য বছরে ১ শতাংশ হারে সুদে দিতে হবে বাংলাদেশকে। ঋণ শোধে পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ২০ বছর সময় পাওয়া যাবে।
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে রিজভী ঋণের শর্তগুলোকে কঠিন বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “ঋণচুক্তির যে নানা শর্ত, এই শর্তে দুই দেশের মধ্যে এক দেশ থেকে ঋণ নিয়ে স্বাধীনভাবে সেই দেশের কাজ করার যে জায়গা, সেই জায়গাটায় মনে হয়েছে যে, ওই দেশটি অর্থাৎ ছোট দেশটি দুর্বল। মনে হচ্ছে যে দেশটির ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে কঠিন শর্ত।
“বিভিন্ন দেশের ঋণের তুলনায় ভারতের এই ঋণের শর্ত বেশি এবং পরিশোধের সময়সীমাও কম। পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে এটি স্বস্তিকরও নয়।”
ঋণের অর্থে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় প্রকল্প ব্যয় এবং পরোক্ষভাবে সুদের হারও বেড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন রিজভী।
দিল্লি সফররত পররাষ্ট্র সচিবের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, সার্বভৌমত্বের নামে আমরা অন্যদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকব না। তার এই বক্তব্যে আমাদের বিস্মিত ও হতবাক করেছে। পররাষ্ট্র সচিবের বক্তব্য দেশের ভোটারবিহীন সরকারের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার নীতিরই প্রতিফলন বলে আমরা মনে করি।”
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সাথে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নেনেতাদের দেখা করতে না দেওয়ারও সমালোচনা করেন রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা বিলকিস জাহান শিরিন, সানাউল্লাহ মিয়া, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মীর সরফত আলী সপু উপস্থিত ছিলেন।