শনিবার সকালে রাজধানীতে এক মানববন্ধনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, “পররাষ্ট্র মন্ত্রী কী করছেন? তিনি নিশ্চুপ হয়ে বসে রয়েছেন, তার কোনো উদ্যোগ নেই, কোনো ধরনের তৎপরতা নেই। আপনার (প্রধানমন্ত্রী) পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো নিস্তব্ধ, নিথর, নীরব। কোনো ভূমিকা নেই।
“তিনি (মন্ত্রী) না যাচ্ছেন চীনে, না যাচ্ছেন ভারতে। আজকে তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া... একটি ক্ষুদ্র মুসলিম দেশ মালদ্বীপ, তারাও পর্যন্ত বাণিজ্য সস্পর্ক ছিন্ন করেছে। আপনার দেশে রোহিঙ্গারা আসছে, আপনাদের তো কোনো বক্তব্য নেই।”
একে সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতা আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “রোহিঙ্গাদের ঢলকে সামাল দিয়ে তাদেরকে আশ্রয় দেওয়া এবং তাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে তার (পররাষ্ট্রমন্ত্রীর) সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে যে ধরনের স্তব্ধতা দেখছি, যে ধরনের দুর্বলতা দেখছি, সেটার আমরা নিন্দা জানাই।”
“অবিলম্বে তাদেরকে আশ্রয় দেওয়া হোক, খাদ্য দেওয়া হোক, চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং দ্রুত মিয়ানমারের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরালো করে তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে রোহিঙ্গাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।”
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের শিকার হয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা গত ২৫ অগাস্ট থেকে বাংলাদেশ পানে ছুটছে।
কয়েক দশক ধরে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার ভার বহন করে আসা সরকার নতুন করে শরণার্থী নিতে অনীহ হলেও এরই মধ্যে মিয়ানমারের প্রায় তিন লাখ মুসলিম নাগরিক বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে বলে জাতিসংঘের তথ্য।
রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতনের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন আয়োজন করে বিএনপিপন্থি পেশাজীবীদের সংগঠন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।
পরিষদের আহ্বায়ক আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, “পাশ্বর্বতী দেশ মিয়ানমারের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত অং সান সু চি নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপরে গণহত্যা চালাচ্ছেন। গুজরাটের আরেক গণহত্যাকারী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই গণহত্যাকারী সূ চিকে মিয়ানমারে উড়ে গিয়ে সমর্থন জানিয়েছেন।
“আর বাংলাদেশে আরেকজন মুসলমান হত্যাকারী, যিনি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আছেন... শেখ হাসিনা, তিনি তার খাদ্যমন্ত্রীকে মিয়ানমারে পাঠিয়েছেন চাল কিনবার জন্যে। এই যে হত্যাকারীদের ত্রিভুজ, তাদের প্রতি আমরা নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি।”
নির্যাতিত নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের জন্যে শিগগিরই মিয়ানমারের মধ্যে একটি সেইফ জোন তৈরিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, “সেই সেইফ জোন তৈরি করে সেখানে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আহার, বাসস্থান ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি।”
সম্মিলিন পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের শওকত মাহমুদ, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব এর অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, এসএম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, এগ্রিকারচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এ্যাব এর হাসান জাফির তুহিন, ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু বক্তব্য রাখেন।