হামলার নেপথ্যে বিএনপির কোন্দল, সন্দেহ হাছান মাহমুদের

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলার জন্য এবার বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে দায়ী করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য হাছান মাহমুদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 June 2017, 03:16 PM
Updated : 19 June 2017, 03:16 PM

বিএনপির অভিযোগের মুখে থাকা আওয়ামী লীগের এই নেতা সোমবার ঢাকায় শিল্পকলা একাডেমিতে এক অনুষ্ঠানে বলেন, “গ্রুপিংয়ের কারণেও তার (ফখরুল) গাড়িবহরে হামলা হতে পারে।”

পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত রাঙামাটিতে যাওয়ার পথে রোববার সকালে যাওয়ার পথে রাঙ্গুনিয়ার ইছাখালীতে হামলার মুখে পড়ার পরপরই হাছান মাহমুদের অনুগতদের দায়ী করেন বিএনপি নেতারা।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ তখন রাঙ্গুনিয়াতেই ছিলেন। বিকালে নেতা-কর্মীদের নিয়ে সড়ক মেরামতের কাজেও দেখা যায় তাকে।

হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে হাছান মাহমুদ রোববার বলেছিলেন, “মির্জা ফখরুল রাঙামাটি যাওয়ার পথে ইছাখালী এলাকায় তাদের গাড়ির ধাক্কায় স্থানীয় দুজন আহত হয়। এতে বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।”

তবে তার এই বক্তব্যকে ‘মিথ্যাচার’ আখ্যায়িত করেন বিএনপির প্রতিনিধি দলে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম।

একদিন বাদে সোমবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের আলোচনা সভায় হাছান মাহমুদ বলেন, “আমরা জেনেছি বিএনপির মহাসচিবের গাড়িবহরের ধাক্কায় দুজন স্থানীয় গুরুতর আহত হয়ে এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় জনতার সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের কথা কাটাকাটি। এর এক পর্যায়ে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা তাদের গাড়িবহরে হামলা চালায়।” 

হামলায় আহত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

এর পরপরই বিএনপির কোন্দলের প্রসঙ্গটি আনেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। 

“চট্টগ্রাম ও রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপিতে দীর্ঘদিন ধরে গ্রুপিং চলমান। আমরা যতটুকু জেনেছি, মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে এক গ্রুপের নেতারা থাকলেও অন্য গ্রুপের নেতারা ছিলেন না। এছাড়া চট্টগ্রামের রাউজান এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সাকা চৌধুরী জনপ্রতিনিধি ছিলেন। তার পরিবারের কোনো সদস্যও ফখরুলের গাড়িবহরে ছিলেন না। এসব গ্রুপিংয়ের কারণেও তার গাড়িবহরে হামলা হতে পারে।”  

এই ঘটনা নিয়ে বিএনপি ‘রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের’ চেষ্টা করছে বলেও দাবি করেন সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

“যখন ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কাজ প্রায় শেষ তখন বিএনপির নেতারা দুর্গত এলাকায় যাওয়ার জন্য রওনা দেন এবং হামলার ঘটনা ঘটে। এখন তারা ঘটনাটিকে বড় সংবাদ বানানোর চেষ্টা করছেন।”

বিএনপি মহাসচিবের গাড়ি বহরে হামলাকে একই সঙ্গে ‘দুঃখজনক’ ও ‘রহস্যজনক’ বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।

হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি

“তাদের গাড়িবহরে কোনো ত্রাণ সামগ্রী ছিল না। এছাড়া প্রশাসনকে আগের দিন যেই রাস্তা দিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে সেই রাস্তা তারা ব্যবহার করেনি। প্রশাসনের সঙ্গেও তারা কোনো সমন্বয় করেনি। তাদের এসব কর্মকাণ্ড রহস্যজনক। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সব কিছু বের করা হবে।”

এদিকে ফখরুলের গাড়ির বহরে হামলার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

তিনি সোমবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক সভায় বলেন, “মির্জা ফখরুল ইসলামের গাড়ির বহরে হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা গণতন্ত্রের শত্রু। তারা যে দলেরই হোক তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।”

হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, “যারা এধরনের জঘন্য কাজ করেছে তারা কোনো দলের বন্ধু হতে পারে না। আওয়ামী লীগ এ কাজকে সমর্থন করে না।”

এই প্রসঙ্গে নাসিম বলেন, “অতীতে শেখ হাসিনার উপর অসংখ্যবার হামলা হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না।”